যশোরের শার্শা উপজেলায় শুরু হয়েছে রোপা আমন চাষের মৌসুম। অথচ বর্ষায়ও দেখা নেই প্রত্যাশিত বৃষ্টির। তাই অধিকাংশ কৃষক সেচ দিয়ে চারা লাগানো শুরু করেছেন। এতে বাড়তি খরচ তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। ফলে রোপা আমন চাষ নিয়ে রীতিমতো হতাশায় রয়েছেন তারা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর যশোরের শার্শা উপজেলায় রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। বাকিটা এ মাসের মধ্যে রোপন হয়ে যাবে। গত বছর চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির। চাষ হয়েছিল ২১ হাজার ১৪২ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছিল ৭৭ হাজার ১০৫ মেট্রিক টন ধান।
কৃষক ইমরান সরকার বলেন, “আমার নিজের জমি নেই। মানুষের জমি বর্গা নিয়ে ধান আবাদ করি। এবার বৃষ্টি নেই, খুব দুশ্চিন্তায় পড়েছি। মানুষের সেচপাম্প থেকে ঘণ্টায় ১২০ টাকা দরে জমিতে পানি দিচ্ছি। এবার ১০ বিঘা জমিতে সুগন্ধি জাতের আমন ধান লাগাবো। তাহলে বোঝেন এই এতগুলো জমিতে ঘণ্টা ধরা পানি দিয়ে ধান লাগাতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। সময় মতো যদি পানি না হয় তাহলে এবার ধান উৎপাদন খরচ আরও বাড়বে।”
আমজাদ আলী নামের একজন কৃষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “চাষাবাদ করে আর সংসার চালানো যাবে না। বৃষ্টির দেখা নেই। তাছাড়া যেভাবে ডিজেল, রাসায়নিক সারের দাম বাড়ছে তাতে কৃষিকাজ করে লাভবান হওয়া সম্ভব হবে না।”
কৃষক আক্কাস মিয়া, শাকিরুল মিয়া ও শাহিন হোসেন বলেন, জমিতে এ সময় অনেকে আমন ধানের চাষ করেন। বর্ষা ভরা মৌসুমে বিলে শাপলার দেখা মেলে। তবে এবারে বিলে এক ফোটা পানি জমেনি। মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। এবারে বিলের নিচু জমিতে ধানচাষের জন্য কৃষকরা জমি প্রস্তুত করছেন। তবে শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচ দিয়ে ধানের আবাদ করতে অনেক খরচ হচ্ছে। অতিমাত্রার খরচ করে ধানের আবাদ করে লোকশান হবে।”
শার্শা উপজেলা কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহা বলেন, “এখনো সময় হাতে আছে। আগস্টের শেষ পর্যন্ত রোপণ করা যাবে। এ সময়ের মধ্যে কাঙ্খিত বৃষ্টি না হলে সেচ দিয়ে আমন রোপণের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হবে।”