• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কচুর মুখিতে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা


বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম
কচুর মুখিতে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা

চলতি মৌসুমে রোগবালাই কম, উৎপাদন ভালো ও স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য পাইকারি বাজারজাতকরণের সুবিধার্থে যশোরের শার্শায় মুখিকচু (সারকচু) চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মুখিকচু চাষে কৃষকদের মাঝে একদিকে আগ্রহ বেড়েছে অন্যদিকে নারী শ্রমিকদের নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। যেখান থেকে প্রতিদিন নারী শ্রমিকরা ৩০০-৪০০ টাকা আয় করছেন। সব মিলিয়ে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় প্রতি মৌসুমে বৃদ্ধি পাচ্ছে মুখিকচুর চাষ।

শার্শা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ১৮০ হেক্টর জমিতে মুখিকচু চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় রোগবালাই কম। কম খরচে বেশি লাভজনক হওয়ায় গত বছরের চেয়ে এ বছর বেশি জমিতে মুখিকচুর চাষ হয়েছে।

উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নে ৭০ হেক্টর জমিতে মুখিকচু চাষ করা হয়েছে। এছাড়া কেরালখালী-বাসাবাড়ি, বসন্তপুর-পাড়িয়ারঘোপ, কন্দর্পপুর-ভায়না এলাকায়ও মুখিকচুর চাষ হয়েছে।

বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা যায়, শত শত বিঘা জমিতে দেশি ও উচ্চ ফলনশীল জাতের মুখিকচু চাষ করা হয়েছে। সেই কচুর সবুজ পাতা-গাছ বাতাসে দোল খাচ্ছে।

ছোট নিজামপুর এলাকার মুখিকচু চাষি আব্দুল আলীম বলেন, “এ বছর এক বিঘা জমিতে মুখিকচু চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং তেমন কোনো রোগবালাই না হওয়ায় প্রতি বিঘায় আনুমানিক ৭০-৮০ মণ কচু উৎপাদন হবে। কচু তোলার সময় বৈরি আবহাওয়া না হলে সব খরচ বাদ ভালো একটা লাভ হবে বলে আশা করা যায়।”

পাড়িয়ারঘোপের আবু জাফর ও আবদুল্লাহ, কেরালখালির বাবু, মিজান, তোতা, ইমরান, সালাম ও বিপ্লব, ভায়নার আজগার, বসন্তপুরের সাধন ও নৈহাটি গ্রামের তবিসহ বেশ কয়েকজন চাষির সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, কৃষি কর্মকর্তাদের উৎসাহ ও পরামর্শ অনুযায়ী মুখিকচু চাষ করে তারা গত বছর বেশ লাভবান হয়েছিলেন। এজন্য এবছরও তারা মুখিকচু চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন। সেই সঙ্গে ভালো দাম পাওয়ারও আশা করছেন। বিঘাপ্রতি খরচ বাদ দিয়ে ৪৫-৫০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে মনে করছেন চাষিরা।

জমি থেকে কচু তুলতে আসা নারী শ্রমিক রাবেয়া, খোদেজা, মমতাজ, লিমা ও আকলিমা বেগম বলেন, “বাড়ি বসে না থেকে বাড়তি আয়ের জন্য কচুর জমিতে প্রতিবছর এই সময় কাজ করি। কচুর জমি থেকে তোলার পর পরিষ্কার করলে কেজি দরে টাকা পাই। যা মোটামুটি প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা হয়। সংসারের স্বামীর পাশাপাশি নিজেরাও আয়ের পথ হিসেবে এই কর্মে লিপ্ত হয়েছি।”

এ বিষয়ে উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অসিত কুমার মন্ডল বলেন, “কৃষকদের মুখিকচু চাষে উদ্বুদ্ধ করা ও নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হয়। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে কচু চাষ। আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে পুরোদমে কচু উঠতে শুরু করবে। নিজামপুর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ৭০ হেক্টর জমিতে কচু চাষ করা হয়েছে।’

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, “মুখিকচু একটি লাভজনক ফসল। উপজেলায় ১৮০ হেক্টর জমিতে মুখিকচুর চাষ হচ্ছে। আগামীতে এই উপজেলায় আরও ব্যাপকভাবে মুখিকচুর চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি।”

Link copied!