যশোরের শার্শা উপজেলায় বৈরী আবহাওয়ার কারণে শত শত বিঘার বোরো ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। অনেকের জমির ধান কাটা শেষ হলেও এখনো ঘরে তোলা সম্ভব হয়নি। চাষিরা বলছেন, গত দুই দিনের বৃষ্টিতে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং এভাবে যদি বৃষ্টি চলে তাহলে আরও ক্ষতি হবে।
কৃষকরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আশানুরূপ ফলন হয়েছে। কয়েক দিন ধরে মাঠ থেকে ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। আনন্দ আর উৎসাহ নিয়ে অনেক চাষি ধান কেটে বাড়িতে নিয়েছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে তিন-চার দিনের মধ্যে ধান ঘরে তোলার কাজ সম্পন্ন হবে। কিন্তু সে আশা গুড়েবালি। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর বৃষ্টিতে ভিজে গেছে অনেকের শুকনো ধান।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার (নিজামপুর, বাহাদুরপুর, লক্ষ্মণপুর, ডিহি, পাকশিয়ায়) মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ জমির ধান এখনো মাঠে। অনেকেই ধান কাটার পর শুকানোর জন্য রেখে দিয়েছেন। আবার কেউ কেউ শুকনো ধানের বেঁধে গাদা করে রেখেছেন। মেঘাচ্ছন্ন আকাশ আর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে ভিজে ভিজে ধান বাঁধছেন তারা।
উপজেলার নিজামপুর গ্রামের কৃষক শুকুর আলী জানান, দুই বিঘা জমিতে এবার বোরো ধানের চাষ করেছিলেন। এর মধ্যে ১ বিঘা ৮ কাঠা বাড়িতে আনা হয়ে গেছে। ১২ কাঠা জমির ধান বৃষ্টিতে ভিজেছে।
একঝালা গ্রামের কৃষক ময়না মিয়া বলেন, “১৭ কাঠা জমির ধান ভেজা অবস্থায় পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো না হলে আনা সম্ভব হবে না।দুই বিঘা জমিতে চাষ করেছি, সব ধানই মাঠে পড়ে আছে।”
কৃষকরা বলছেন, আকাশে মেঘ দেখলেই কষ্ট লাগে। গত দুই বছর টানা বৃষ্টি ও আম্পানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চলতি বছরেও যদি আবহাওয়া এমন ভয়াবহ রূপ নেয় তাহলে পথে নামতে হবে।
কৃষি অফিসের সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে শার্শায় ২৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬০ ভাগ বোরো ধান কৃষকের ঘরে উঠেছে। দ্রুত যেন বাকি ধান ঘরে তোলা যায়, সে বিষয়ে কৃষকদের বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ মণ্ডল সংবাদ প্রকাশকে বলেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি কিছুটা খারাপ হলেও দুই দিনের বৃষ্টিতে ধানের তেমন সমস্যা হবে না। তবে বৃষ্টির আগে যারা ধান ঘরে তুলতে পারেননি, তাদের ধানের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব মাঠ থেকে পানি অপসারণ করে ধান সংগ্রহ করতে হবে।