• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮ ফাল্গুন ১৪৩০, ২২ শা'বান ১৪৪৬

কৃষক লীগ নেতা এখন তাঁতী দলের সভাপতি


পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৩:৩৫ পিএম
কৃষক লীগ নেতা এখন তাঁতী দলের সভাপতি

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের হাওয়ায় পাবনার চাটমোহরে আব্দুস সালাম নামের কৃষক লীগ নেতা এখন জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উপজেলার বিলচলন ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি হয়েছেন।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়। বর্তমান তাঁতী দলের এই নেতার বাড়ি চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের উত্তরসেনগ্রামে। তিনি বিলচলন ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার (ইউপি সদস্য)।

কৃষক লীগ ও তাঁতী দলের অনুমোদিত কমিটির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২৩ সালের ২১ সেপ্টেম্বর পাবনা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক চাটমোহর উপজেলা কৃষক লীগের কমিটি অনুমোদন করেন। সেই কমিটির ৬৯ নম্বর সদস্য ছিলেন আব্দুস সালাম।

এদিকে, চলতি বছরের গত ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল বিলচলন ইউনিয়ন শাখার কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। তাঁতী দল চাটমোহর উপজেলা শাখার সভাপতি নুরুল ইসলাম (সামাদ) ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম আযম স্বাক্ষরে অনুমোদনকৃত কমিটিতে বিলচলন ইউনিয়ন শাখার সভাপতি হয়েছেন সেই আব্দুস সালাম।

এছাড়াও সালামের বেশকিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে। সেখানে দেখা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুকে পোস্টার শেয়ার করেছিলেন তিনি। যেখানে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও জয়ের ছবি এবং পাবনা-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মকবুল হোসেনের ছবি রয়েছে। পাশাপাশি বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আকতার হোসেনের সঙ্গ রয়েছে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক।

এদিকে কৃষক লীগের কমিটিতে থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, “ওই কমিটির সদস্য কবে কীভাবে হয়েছি নিজেও জানি না। কেউ আমার আইডি কার্ড ব্যবহার করে এই কাজ করতে পারে। আর মেম্বার হিসেবে কখনো কখনো চেয়ারম্যানকে নিয়ে চলাফেরা করতে হয়েছে। সেটা দোষের কিছু নয়। এছাড়া আমার এক নাতী আমার ফোন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবি দিয়ে পোস্টার বানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিল। সেটা দেখার সঙ্গে সঙ্গে ডিলিট করে দিয়েছিলাম। আমি ও আমার গোষ্ঠি সারাজীবন বিএনপি করে আসছি।”

আব্দুস সালাম আরও বলেন, “এখন তো অনেক আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে বিএনপির লোকজন ঘুরে বেড়ায়। সেগুলো তো কেউ দেখে না। বিশেষ করে যে আকতার চেয়ারম্যানকে নিয়ে আমার ঘোরার ছবির কথা বলছেন সেই আকতার চেয়ারম্যানকে নিয়ে এখন বিএনপিরই লোকজন ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাহলে তাদের কী হবে?”

এসব বিষয়ে জানতে চাটমোহর উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মজনু খাঁ বলেন, “আব্দুস সালাম ওই সময়ে সম্ভবত জেলা কৃষক লীগের কমিটিতে ছিলেন। আমাদের সঙ্গেও দল করেছে। এখন তিনি যদি অন্য দল করেন সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই।”

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক গোলাম আযম বলেন, “আপনি যে অভিযোগের কথা বললেন সেটি আমার জানা ছিল না। বিষয়টি আমি যাচাই বাছাই করব। অভিযুক্ত আব্দুস সালাম কৃষক দল করতেন জেনে তাকে কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে। তবে যেহেতু অভিযোগ উঠেছে সে কারণে সালাম যে কৃষকদল করতেন তার প্রমাণ চাইব। তারপর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের দোসর কাউকে অনুপ্রবেশ করিয়ে দলের সুনাম ক্ষুন্ন হতে দেব না।”

চাটমোহর উপজেলা তাঁতী দলের সভাপতি নুরুল ইসলাম (সামাদ) বলেন, “ওই ইউনিয়নের কমিটির দেওয়ার বিষয়ে দায়িত্ব ছিল সেক্রেটারির। তাকে বলেছিলাম, অন্যকোনো দলের কেউ আছে কি না। সেক্রেটারি আমাকে নিশ্চিত করেছিলেন কোনো সমস্যা নাই। তারপর কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এখন শুনছি সালাম নাকি অন্য দল করত। আমি নিজে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। যদি অভিযোগ সত্য হয় তাহলে তাকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে।”

Link copied!