ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার বগাইলে বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের টোলপ্লাজা এখন মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। প্রতিরাতেই টোলপ্লাজার ভেতরে ঘটছে দুর্ঘটনা। গত একমাসে এ টোলপ্লাজায় ছোট বড় মিলিয়ে অর্ধশতাধিক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫টি, এতে প্রাণহানিসহ যানবাহনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ভাঙ্গা ইন্টারএক্সচেঞ্জ ফ্লাইওভার গোলচত্বর থেকে শুরু করে ১ কিলোমিটার লম্বা ও প্রায় ৩০ মিটার উচ্চতার একটি রেল ফ্লাইওভার মিশেছে বগাইল টোলপ্লাজার গোড়ায়। অনেক উঁচু থেকে নিচের টোলপ্লাজায় থামাতে যেয়ে চালকরা গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায়-ই সামনে থাকা যানবাহনে লাগিয়ে দিচ্ছেন। ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা, হচ্ছে জানমালের ক্ষতি।
সর্বশেষ ৩০ জানুয়ারি ভোরে একটি কাভার্ডভ্যান টোলপ্লাজার ভেতরে দুটি গাড়িকে চাপা দেয়। এতে তিনটি গাড়ির চালক-যাত্রী ভেতরে আটকা পড়েন। খবর পেয়ে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ইলেকট্রিক ড্রিল মেশিন দিয়ে কেটে তাদের উদ্ধার করেন। এর আগে ২৪ জানুয়ারি টোলপ্লাজায় একটি প্রাইভেট কারের ওপর উঠে যায় দৈত্যাকার একটি ট্রাক। এতে ঘটনাস্থলেই একজন নিহতসহ একাধিক যাত্রী আহত হন।
গত ১২ জানুয়ারি একইভাবে আরেকটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টোলপ্লাজার ওপর উঠে যায়। এর কিছুদিন আগে একটি লোকাল বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টোলপ্লাজার ওপরে উঠে উল্টে যায়। সে সময় ঘটনাস্থলেই ৫ যাত্রী নিহত ও অনেক যাত্রী আহত হন।
বগাইল টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক জাকারিয়া হোসেন জানান, ঘন কুয়াশা ও পর্যাপ্ত আলোর অভাবে চালকরা নিজেদের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে সামনে থাকা গাড়িকে চাপা দেন। এভাবে প্রতিদিন ছোট বড় একাধিক দুর্ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈমুর আলম জানান, বগাইল টোলপ্লাজার অবস্থা দিন দিন ভয়াবহ হচ্ছে। অসাবধানতা ও ঘন কুয়াশার পাশাপাশি আলোর স্বল্পতার কারণে চালকরা গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন। এতে করে বাড়ছে দুর্ঘটনা।
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আজিম উদ্দিন বলেন, “বিষয়টি নিয়ে ফরিদপুরের ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। এছাড়া এ ব্যাপারে স্যারকে একটি লিখিত দেবো। স্যার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে টোলপ্লাজা সরানোর কার্যকরী ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।”