গাজীপুরে গত নির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট হয়েছিল ইভিএমে। এবার সব কেন্দ্রেই ইভিএম মেশিনে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। ইলেকট্রনিক এই যন্ত্রটি কারো কাছে সহজ মনে হলেও কারো কাছে এটি কঠিন। যদিও ভোটের আগেই নানাভাবে ভোটারদের জানানো হয়েছিল ইভিএমের ব্যবহার। তবে কেন্দ্রে এসে অনেকেই তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই প্রবীণ।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সকালে গাজীপুরের এক কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের ইভিএমে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি শেখানো হচ্ছে।
নির্বাচনী কর্মকর্তারা জানান, যেসব কেন্দ্রে প্রবীণ ভোটারের সংখ্যা বেশি, সেখানে ভোট দিতে দেরি হচ্ছিল। কারণ, কাউকে কাউকে বেশ কয়েকবার দেখিয়ে দিতে হয় ভোটদান প্রক্রিয়া।
সাত কিলোমিটার দূর থেকে গাজীপুরের শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল কেন্দ্রে সিটি নির্বাচনের ভোট দিতে এসেছিলেন প্রবীণ রমজান আলী। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে আঙ্গুলের ছাপে নিজের পরিচয় নিশ্চিত করে ভোটকক্ষেও ঢোকেন। কিন্তু ভোট দিতে পারছিলেন না। চারবার তিনি ছুটে আসেন নির্বাচনী কর্মকর্তাদের কাছে।
কর্মকর্তা ও পোলিং এজেন্টরা তাকে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি শিখিয়ে দিলেও বারবার ভুল করছিলেন। পঞ্চমবারের চেষ্টায় ঠিকমত বোতাম চেপে পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পেরেছেন তিনি।
ইভিএমে ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার রমজান বলেন, “চার-পাঁচবার গেছি, বারবার সমস্যা হইয়া যায়। শেষ পর্যন্ত দিতে পারছি।”
একই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা আবেদ সরকারের অভিজ্ঞতা রমজান আলীর চেয়ে ভিন্ন। একবারের চেষ্টাতেই ভোট দিয়ে শেষ করেন তিনি।
৩৯ বছর বয়সী সোনিয়া বেগম ইভিএমে ভোট দিয়ে বের হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “আমি প্রথমে বুঝি নাই, কয়েকবার ফিরে আসছি। পরে ঠিকমত বুঝতে পারার পর ভোট দিতে পেরেছি। এই এক যন্ত্রণা! কাগজেরটাই ভালো আছিল।”
তবে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেল তরুণদের মধ্যে। বেশিরভাগ তরুণই খুব সহজ মনে করছে এই পদ্ধতি। ১৯ বছর বয়সী হালিমা আক্তার বলেন, “খুব সহজে ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। আসলাম আর ভোট দিলাম।”
এরকম মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে গাজিপুর নির্বাচনী এরিয়ার প্রায় সব কেন্দ্রে।
শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের একটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, “ইভিএম মেশিন নতুন তো অনেকের কাছে। আবার অনেকে বয়স্ক ভোটার। এ কারণে একটু সময় নিচ্ছে। সবাই পারদর্শী হলে আরও দ্রুত দিয়ে দিতে পারত।”