নকশা জরি-পুথি বসানো কাপড়, পাটজাত পণ্যসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের হাতের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী ক্রয় বিক্রয়ের প্রসার বাড়াতে ঠাকুরগাঁওয়ে মেলার আয়োজন করেন শিল্প সহায়ক কেন্দ্র বিসিক।
শনিবার (১১ মার্চ) ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (জেলা স্কুল বড়মাঠ) মাঠে শুরু হয় দশ দিনব্যাপী এই ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মেলা। এ মেলা চলবে আগামী ২০মার্চ পর্যন্ত।
মেলায় নিজেদের তৈরি বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী প্রদর্শন ও বিক্রি করে একদিকে যেমন খুশি উদ্যোক্তারা, আবার অসন্তোষ জানিয়েছেন অনেকে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দর্শক-ক্রেতাদের স্বাগত জানাতে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। মাঠের চারদিক ঘিরে রয়েছে সারি সারি অর্ধশত স্টল। স্টলে রয়েছে চারটি তৈরি পোশাক, অঙ্গসজ্জা ও গৃহস্থালির পণ্য, গহনা, মেয়েদের ব্যাগ, খেলনা, আচার ও খাবারের পণ্য। কোনো কোনো স্টল এখনো ফাঁকা রয়েছে। স্টলগুলোতে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পণ্য বলতে অনন্যা হস্তশিল্পের তৈরি পোশাক ও খাবার, পাটের ব্যাগ ছাড়া তেমন কোনো পণ্য দেখা যায়নি।
সুবর্ণ আর্ক নামের এক উদ্যোক্তা বলেন, “একটা স্টলের জন্য আমাদের কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা ফি দিয়ে নেওয়া হয়েছে। এতো টাকা ফি দিয়ে পণ্য বিক্রি করে লাভ উঠানো খুবই কস্টসাধ্য।“
প্রিয়াংকা নামের আরেক উদ্যোক্তা বলেন, “আমাদের দেশীয় পণ্যগুলো হাতের কাজের পণ্যগুলো মেলায় তুলে ধরেছি। ক্রেতাদের কাছে আমাদের পণ্য তুলে ধরতে পারছি বলে খুবই ভালো লাগছে। তবে এখানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী স্টল বরাদ্দ নেওয়ায় আমাদের উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্য বিক্রি করতে সমস্যা হচ্ছে।
মাহাবুব হাসান নামে এক ক্রেতা বলেন, “মেলা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের পণ্যের প্রচার, প্রসার ও বিপণনে সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কিন্তু বিসিক আয়োজিত এ মেলায় স্থানীয় উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের তুলনায় ব্যবসায়ীদের পণ্য বেশি দেখা যাচ্ছে।”
মজিবর রহমান খান নামে এক দর্শনার্থী বলেন, “বিসিকের মেলায় ঢাকার পণ্য দেখছি। বাণিজ্য মেলা আর এ মেলার মধ্যে আমি কোন তফাৎ খুঁজে পাচ্ছি না।”
ঠাকুরগাঁও বিসিক শিল্প নগরীর উপব্যবস্থাপন নুরেল হক বলেন, “বিসিকের অর্থায়নে মেলাটি হচ্ছে। আমাদের নির্দেশনা আছে ফি নিয়ে আবার ফি টা প্রেরণ করতে হবে। যারা বিসিক থেকে নিবন্ধিত তারা ৪,৫০০ হাজার টাকা আর অনিবন্ধিত তাদের জন্য ৬,০০০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখানে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা ফি কমিয়ে দিয়েছি।”
ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, “আমাদের সরকার উন্নায়নের সরকার। আর যদি দশটি বছর জনগণ আমাদের সুযোগ দেয়, আমি লিখিত দিচ্ছি বাংলাদেশ উন্নত দেশের মধ্যে এক নম্বরে আসবে। আমাদের ফসল উৎপাদন করতে সময় লাগে না। গাছ লাগাতে সময় লাগে না। দুই তিন বছরের মধ্যে ফল পাওয়া যায়। এটা পৃথিবীর কোথাও নেই।”