দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে যশোর-১ (শার্শা) আসনে জমে উঠেছে প্রচার-প্রচারণা। প্রতিদিন নেতা-কর্মীরা মিছিল-মিটিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত অব্দি গণসংযোগের পাশাপাশি নানা কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। তারা ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকলে উৎসবমুখর নির্বাচন হবে বলে মনে করেন ভোটাররা।
যশোরের শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে যশোর-১ আসন গঠিত। দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল এই আসনে অবস্থিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৪ হাজার ৬৯২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৬ জন। আর নারী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ৪৭ হাজার ১১৬ জন।
যশোর-১ আসনে এবারের নির্বাচনে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন নৌকার প্রার্থী এমপি শেখ আফিল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র জেলা আওয়ামী লীগের নেতা আশরাফুল আলম লিটন (ট্রাক প্রতীক) ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মো. আক্তারুজ্জামান।
নির্বাচনে লড়াই হবে নৌকা প্রতীকের শেখ আফিল উদ্দিন ও ট্রাক প্রতীকের প্রার্থী আশরাফুল আলম লিটনের মধ্যে। তারা দুজনই নির্বাচনে জেতার ব্যাপারে আশাবাদী।
আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিন বলেন, “গত ১৫ বছরে এলাকায় নজিরবিহীন উন্নয়ন করেছি। নিজ অর্থে রাস্তা, স্কুল-কলেজ নির্মাণ করেছি। শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে খাতা-কলম দিয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকার এ এলাকায় রাস্তা, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিদ্যুৎসহ অনেক কিছু দিয়েছে। এক সময়ের সেই ভূতুড়ে পল্লী এখন শহরে রূপান্তরিত হয়েছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সংবর্ধনা দিয়েছি। আমি জুটমিল স্থাপন করে প্রায় ১০ হাজার নর-নারীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যা গ্রামীণ অর্থনীতিতে একটি বিপ্লব ঘটেছে।
তিনি আবারও আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ভোটারদের কাছে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী বেনাপোল পৌরসভার সাবেক মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, “শার্শার মানুষ বোমাবাজি নয়, সন্ত্রাস নয়, তারা চায় শান্তি। বিগত ১৫ বছর আপনাদের ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও তিনি এলাকার সমস্যার কথা বলতে সংসদে যাননি। তার ভোট চাওয়ার কোনো অধিকার নেই। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন লোক দিয়ে পোস্টার ছিঁড়ছে।”
তিনি বলেন, “আমাদের যারা পোস্টার লাগাচ্ছে তাদের ভয় দেখাচ্ছে, বাড়ি বাড়ি যেয়ে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে নিষেধ করছে। প্রয়োজনে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে ভোট কেন্দ্রে যাবেন। আজ নেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন করার জন্য। তাই আমরা নির্বাচন করছি। এবারের লড়াই হবে একই দলের অত্যাচারীদের সঙ্গে নির্যাতিতদের লড়াই। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা ২০০৮ সালে ভোট করেছিলাম সে স্বপ্ন আমাদের বাস্তবায়িত হয়নি। আজ বাবার চোখে পানি। মায়ের চোখে কান্না, ছেলে হারানোর বেদনা স্বামী হারানোর যন্ত্রনা এই শার্শার মানুষ বুঝতে পেরেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এই আসনে ট্রাক প্রতীক বিপুল ভোটে জয়লাভ করবেন বলে আশা করছেন।”