জামালপুরের মেলান্দহে ছেলে ও ছেলের বউয়ের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন পিয়ারা বেগম নামে এক বৃদ্ধ মা।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের সূর্যনগর এলাকায় নিজ বাড়িতে পিয়ারা বেগম ও তার প্রতিবন্ধী মেয়ে বুলবুলি বেগমকে ছেলে শাহিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী পারভীন আক্তার মারধর করেন। পুলিশ বলছে নির্যাতিতা পিয়ারা বেগম নামের এক বৃদ্ধা অভিযোগ দিয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ ঘটনায় ওই দিন বিকেলে বৃদ্ধ মা পিয়ারা বেগম তার ছেলে শাহিদুল ও ছেলের বউ পারভীনের নামে মেলান্দহ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের ঝাউগড়া সূর্যনগর এলাকার মৃত সালাম আকন্দের স্ত্রী পিয়ারা বেগম। সালাম আকন্দ ১৯৮৮ সালে অসুস্থ হয়ে মারা যান। তার এক ছেলে শাহিদুল এবং দুই মেয়ে শাহানা ও প্রতিবন্ধী মেয়ে বুলবুলিকে অন্যের বাড়িতে কাজ করে পিয়ারা বেগম মানুষ করেন। মেয়ে শাহানাকে বিয়ে দিয়েছেন। তবে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় তার ছোট মেয়ে বুলবুলির বিয়ে হয়নি।
পিয়ারা বেগম বলেন, “আমাকে ও প্রতিবন্ধী মেয়ে বুলবুলিকে কোনো কিছু হলেই আমার ছেলে শাহিদুল ও তার বউ পারভীন মারধর করে। আগেও ১০ বার মারছে। আজ সহ্য না করতে পেয়ে থানা আইছি। আজ সকালে মানুষের বাড়ি থেকে কাজ করে বাড়িতে আইছি। এ সময় আমাকে গালিগালাজ শুরু করে। পরে প্রতিবন্ধী মেয়েডা বলছে গালাগালি না করতে। এ কথার পরেই মেয়েকে ঘুসি মেরে চুল ধরে ঘর থেকে বের করে। পরে আমাকেও মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।”
পিয়ারা বেগম আরও বলেন, “হেঁটে অনেকক্ষণ আইছি, গাড়ি আলারা গাড়িতে তুলতে চায় না। তারপর ১০ টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে থানায় আইছি, জীবনে থানাও চিনি না, আজ আইছি প্রথম। আমারে আর প্রতিবন্ধী মেয়েকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়ে বারবার ঘরে তালা মারে। কোনো কিছু হইলেই চুল ধরে পারভীন আমাকে ও মেয়েকে মারে।”
সূর্যনগর এলাকার বুলবুল নামে একজন বলেন, “কোনো কিছু হলে প্রতিবন্ধী মেয়েটাকেও পিয়ারা বেগমকে মারধর ও নির্যাতন করে। ছেলেটাকে ছোট থেকে অনেক কষ্ট করে বড় করেছেন পিয়ারা। ছেলে তার মাকে অনেক আগে থেকেই কোনো খরচাপাতি দেয় না। আমরা এলাকার লোকজন বসে ছিলাম, তবুও তার ছেলে কোনো কিছু মানে না।”
এ বিষয়ে মেলান্দহ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, “পিয়ারা বেগম নামে এক নারী ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”