রাজধানীর অদূরে ধামরাইয়ে রথখোলার পাশে শতবর্ষী পুরোনো বণিক বাড়িতে বিভিন্ন ধরনের ধাতুর মিশ্রনে তৈরি করা হয়েছে দেবী দুর্গার প্রতিমা। প্রতিমার ভিন্ন রুপ দিয়েছেন বণিক বাড়ির স্বত্বাধিকারী সুকান্ত বণিক ও কাঁসা-পিতল শিল্পের শিল্পীরা। অষ্ট ধাতুর শৈল্পিক কারুকাজে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা।
জানা যায়, ১২০ বছরের পুরোনো এই বাড়িটি এখনো ধামাইয়ের ঐতিহ্যের ধারক-বাহক। সেই বাড়িতে এখনো ধামরাইয়ের ঐতিহ্য কাঁসা-পিতলের শিল্পের শৈল্পিক চর্চা করা হয়। তারই সাদৃশ্য অষ্ট ধাতুর দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ ও কার্তিকের মূর্তি। প্রায় ১ বছরের বেশি সময় ধরে বেশ কয়েকজন কাঁসা-পিতল শিল্পীর পরিশ্রমে তৈরি করা হয়েছে অষ্ট ধাতুর প্রতিমা। এতে ব্যবহার করা হয়েছে স্বর্ণ, রুপা, পারদ, দস্তা, সীসা, লোহা, রাং ও তামা। প্রতিমাটি ৮ ফুট লম্বা ও ৫২০ কেজি ওজন। এটি তৈরিতে মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ২৫ লাখ টাকা।
বণিক বাড়ির প্রধান ও ধামরাই মেটাল ক্রাফটসের স্বত্বাধিকারী সুকান্ত বণিক বলেন, “প্রায় ২০০ বছর ধরে আমাদের পরিবার এই কাঁসা-পিতলের ব্যবসা করে আসছে। আমি পঞ্চম প্রজন্ম হয়ে এই ব্যবসায় পরিচালনা করছি। আমি চেষ্টা করছি শিল্পটাকে ধরে রাখার। ২০১৭ সালে প্রতিমাটি নির্মাণ করা হয়েছে অষ্ট ধাতুর মিশ্রনে। অষ্ট ধাতু মূলত আটটি গ্রহের প্রতিনিধিত্ব করে।”
তিনি আরও বলেন, ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের বাড়িতে দুর্গাপূজা হয়ে আসছে। পরে ছোট পরিসরে ও স্থানীয়ভাবে প্রতিমা তৈরির কথা চিন্তা করেই অষ্ট ধাতুর প্রতিমা নির্মাণ করেছি। প্রতি বছরই পঞ্চমীতে পূজা অর্চনার সময় দেবী দর্শনের জন্য দশমী পর্যন্ত সর্বসাধারণের প্রবেশ উন্মুক্ত রাখা হয় আমাদের বণিক বাড়িতে। সেই সঙ্গে দশমীতে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী অর্চনা শেষ হয়।
সরেজমিনে বনিক বাড়ির পূজা মণ্ডপে গিয়ে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা যায়। সাভারের রেডিও কলোনি এলাকা থেকে প্রতিমা দেখতে এসেছেন খালিদ হোসেন ও তার বন্ধু দীপঙ্কর দাস। তারা বলেন, “পরিচিতজনদের কাছে এই ব্যতিক্রমী প্রতিমার কথা শুনে এটি দেখতে এসেছি।”
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া এলাকার বাসিন্দা বৃষ্টি সরকার বলেন, “সবখানে তো মাটির প্রতিমা হয়। এখানে অষ্ট ধাতুর প্রতিমা বানানো হয়েছে। এটি দেখতে এসেছি। খুব ভালো লেগেছে।”