দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১০ বা ১১ এপ্রিল ঈদুল ফিতর উদ্যাপন হতে পারে। এরই মধ্যে ঈদ ঘিরে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন নীলফামারীর ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতাদের পদচারণায় মুখর থাকছে মার্কেট, শপিংমলগুলো। ফুটপাতেও ধুম লেগেছে কেনাকাটার। সাধ আর সাধ্যের সমন্বয়ে ক্রেতারা কিনছেন পোশাক, জুতা, অলঙ্কার ও কসমেটিকসসহ প্রয়োজনীয় নানা জিনিসপত্র। এদিকে পিছিয়ে নেই আতর, টুপি, জায়নামাজ ও সুরমা কেনাবেচাতেও।
সোমবার (৮ এপ্রিল) নীলফামারীর বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
ক্রেতাদের অভিযোগ, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার সব কিছুই দাম বেশি। সুপার মার্কেটে কেনাকাটা করতে এসেছেন নীলফামারী সরকারি কলেজর শিক্ষার্থী রিমা আক্তার। তিনি বলেন, “সবকিছুরই দাম খুব বেশি চাওয়া হচ্ছে। কয়েক মাস আগেও যে থ্রি-পিস কিনেছি ১৬০০ টাকায়, সেই থ্রি-পিসই এখন চাচ্ছে ২৪০০ টাকা। এভাবে সব জিনিসপত্রের দাম বাড়লে কেনাকাটা করব কীভাবে।”
নীলফামারীর বড় বাজারে কেনাকাটা করতে আসা রাইসুল ইসলাম বলেন, “একটি পাঞ্জাবি কিনেছি। এখন একটি প্যান্ট কিনব, কিন্তু যে দাম শেষ পর্যন্ত কিনতে পারব কি না তার ঠিক নেই। অন্য সময়ে যে প্যান্টের দাম থাকে ৮০০ টাকা তা এখন চাইছে ১৮০০ টাকা। এইটা কোন কথা বলেন?”
ইয়াসমিন বেগম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, “আমাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে বাজার। তারপরও সন্তানের আবদার মেটাতে তার প্রিয় পোশাক কিনে দিলাম। তবে সবার জন্য হয়তো কেনাকাটা করা হবে না।”
ব্যবসায়ীরা বলছেন, “এবার পণ্যের দাম কিছুটা বেশি। কারণ গতবারের তুলনায় আমরাও দাম দিয়ে ক্রয় করেছি। রমজান মাসজুড়ে ঈদের কেনাকাটা থাকলেও শেষ মুহূর্তে মূলত ভিড় হয়। এবারও তাই হয়েছে। সময় যতই গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে বেচাবিক্রি। আশা রাখি, চাঁদ রাত পর্যন্ত এভাবেই জমজমাট বেচাকেনা চলবে।“
সুপার মার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী শাহিনুর ইসলাম বলেন, “গত তিন মাস আগে যে কাপড় ৮০০ থেকে হাজার টাকায় পাইকারি কিনেছি, সেগুলো ঈদ উপলক্ষে আমাদের কিনতে হয়েছে ১২০০-১৪০০ টাকায়। এতে বাধ্য হয়েই বেশি দামে জামা-কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে। আমরা দামে কিনে সব খরচসহ একটু দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।”
নীলফামারী বড় বাজারের ব্যবসায়ী মোকবুল হোসেন মাজু বলেন, “ঈদের শেষ সময়ে বেচাকেনার চাপ কয়েকগুণ বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায় নারী ও ছোট শিশুদের। নারী ও ছোট শিশুদের জামা কাপড় বেশি বিক্রি হচ্ছে।”
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীরুল ইসলাম বলেন, “ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কেনাকাটা বেড়ে গেছে। আমাদের প্রশাসনের ১০টি টিম মাঠে কাজ করছে। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ঈদের কেনাকাটায় শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে নারী হয়রানি ও ইভটিজিং রোধে বিপুলসংখ্যক মহিলা পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।”