স্বপ্ন ছিল প্রবাসে গিয়ে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাবেন, পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাবেন, ছেলে-সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করে বৃদ্ধ বয়সে একটু আরাম আয়েশে কাটাবেন। সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না শাহ আলম খন্দকারের (৪২)। এখন পরিবারের সদস্যরা অপেক্ষা করছেন প্রিয় মানুষটির লাশের জন্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর এলাকার শাহ আলম। তার পরিবারে রয়েছে মা, ভাই, বোন, স্ত্রী ও এক সন্তান রয়েছে। প্রায় ১৬ বছর যাবত বিদেশের মাটিতে কাটিয়েছেন ওই যুবক। অবশেষে বুধবার (৯ এপ্রিল) পরিবারের কাছে খবর আসে মালয়েশিয়ায় স্ট্রোক করে মারা গেছেন শাহ আলম। এই খবরে স্বজনদের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে।
সরেজমিনে শাহ আলমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পরিবারের অভিভাবক একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছে পুরো পরিবারটি। ছেলের শোকে বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন মা। একমাত্র ছেলেকে বুকে জড়িয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন স্ত্রী।
নিহত শাহ আলমের স্ত্রী মনি বেগম বলেন, “মালয়েশিয়ায় গিয়ে উপার্জন করে পরিবারের জন্য ভালো কিছু করার স্বপ্ন ছিল তার। স্বপ্ন ছিল সন্তানরা বড়, চাকরি করবে। আমরা বৃদ্ধ বয়সে আরাম করব। সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। আমাদের একমাত্র সন্তানকেও সে সরাসরি দেখতে পারল না। আমার সন্তান তার বাবার আদরটুকু পেল না।” এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
নিহত শাহ আলমের ভাই মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমার ভাই গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাতে স্ট্রোক করে মারা গেছে। পরদিন আমরা খবর পাই। আমারদের পরিবারটা শেষ হয়ে গেল। আমার ভাইয়ের লাশ দ্রুত আমাদের কাছে ফেরত দেয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই।”
এ বিষয়ে ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফ-উল আরেফীন বলেন, “মালয়েশিয়ায় নিহত যুবকের লাশ দেশে ফেরত আনার জন্য প্রশাসনিক সকল ধরনের সহযোগীতা করা হবে।”