• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

আড়াই শতাধিক গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও সমিতি


নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ৬, ২০২৪, ০৫:১৯ পিএম
আড়াই শতাধিক গ্রাহকের টাকা নিয়ে উধাও সমিতি

নওগাঁয় জগৎসিংহপুরে ‘সূর্যমুখী বহুমুখী উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামে একটি সমবায় সমিতির দুই কর্মকর্তা গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।  

গ্রাহকদের অভিযোগ, সমিতির কর্মকর্তারা আড়াই শতাধিক গ্রাহকের প্রায় ১২ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন।

শুক্রবার (৫ জুলাই) দুপুরে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা নওগাঁ পৌরসভার জগৎসিংহপুর এলাকায় সমিতিটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।  

মানববন্ধন শেষে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা সমিতির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মুকুল হোসেনের বাড়ির সামনে ভিড় করেন।

গ্রাহকরা বলেন, নওগাঁ পৌরসভার জগৎসিংহপুর গ্রামে ২০১৯ সালে জগৎসিংহপুর সূর্যমুখী বহুমুখী উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি সমিতি প্রতিষ্ঠা করা হয়। নওগাঁ জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে সমিতিটি নিবন্ধন নেন জগৎসিংহপুর গ্রামের বাসিন্দা মুকুল হোসেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে অবৈধভাবে ব্যাংকের আদলে মাসিক ও বার্ষিক আমানত প্রকল্প, স্থায়ী বিনিয়োগ ও স্থানী আমানত নামে বিভিন্ন প্রকল্পের বিপরীতে টাকা জমা রাখতে শুরু করেন। টাকা জমা রেখে গ্রাহকদের প্রতি মাসে মুনাফা দিতে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। ধীরে এর গ্রাহক সংখ্যা ও আমানতের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এভাবে গত পাঁচ বছরে আড়াই শতাধিক গ্রাহকের কাছ থেকে ১২ কোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নেয় সমবায় সমিতিটি।

ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠার পর শুরুর দিকে নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে আমানতের বিপরীতে গ্রাহকদের লভ্যাংশের টাকা নিয়মিত দিয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু দুই-তিন মাস ধরে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পরেও সংস্থার লোকজন গ্রাহকদের আমানত ফেরত ও লভ্যাংশের টাকা জমা দিতে টালবাহানা করতে থাকে। আমানতের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য গ্রাহকের চাপ দিতে থাকলে গত ২ জুলাই মুকুল হোসেন এবং দেলোয়ার হোসেনসহ সমিতির অন্যরা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। এখন আমানতের টাকা ফেরতের জন্য প্রতিদিনই গ্রাহকেরা সমিতির কার্যালয় ও সমিতির সভাপতি মুকুল হোসেনের বাড়ির সামনে ভিড় করছেন।

এ বিষয়ে মুকুল হোসেনের বাড়িতে যোগাযোগ করা হলে তার স্ত্রী সিথী বেগম বলেন, “গ্রাহকের কাছ থেকে আমানতের টাকা জমা নিয়ে তার বিপরীতে উচ্চহারে মুনাফা দিতে গিয়ে আমার স্বামী লোকসানের মধ্যে পড়েছেন। অপরিকল্পিতভাবে সমিতি পরিচালনা করায় এখন তার সব পুঁজি নাই হয়ে গেছে। গ্রাহকের চাপ সহ্য করতে না পারায় তিনি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।” 

সিথী বেগম আরও বলেন, “গ্রাহকরা গত কয়েক দিন ধরে আমার বাড়ি ঘিরে রেখেছে। আমাদের বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না। আমার ছেলেকে মারধর করেছে। দোষ করলে আমার স্বামী করেছে। আমাদের কী দোষ!” 

নওগাঁ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ বলেন, “গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে একটি সমিতির কর্মকর্তাদের লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পেরেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সমিতির কোনো সদস্য এ ব্যাপারে আমার কাছে লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

Link copied!