ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দায় ১৬০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বায়োমেট্রিক ডিজিটাল হাজিরা মেশিন নষ্ট হয়েছে। শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য এসব মেসিন স্থাপন করা হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না। যার কারণে সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্যোগ ভেস্তে গেছে।
জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে সালথা ও নগরকান্দার ১৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্লিপ প্রকল্পের ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দের ওই টাকার ভেতর থেকে ডিজিটাল হাজিরা মেসিন ক্রয় করে প্রতিটি বিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছিল। তবে এসব হাজিরা মেশিনের কার্যক্রম চলে সর্বোচ্চ এক থেকে দুই মাস। এরপর গত ৩-৪ বছর ধরে অজ্ঞাত কারণে হাজিরা মেশিনের ব্যবহার বন্ধ রয়েছে।
সালথার পুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, হাজিরা মেশিন নষ্ট হওয়ায় ব্যবহার করা বন্ধ রয়েছে। মাত্র এক বছর ওয়ারেন্টি ছিল যন্ত্রটির। ওই এক বছরের মধ্যে যাদের হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হয়েছিল তারা মেরামত করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে ওয়ারেন্টি যাদের শেষ হয়েছে তারা আর মেরামত করেননি। তাই সেগুলো বিকল হয়ে পড়ে আছে।
তার মতো অন্যান্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও একই দাবি করেন।
সালথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, “স্লিপের বরাদ্দ থেকে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদ কমিটি নিজ নিজ উদ্যোগে হাজিরা মেশিন ক্রয় করে। এখানে শিক্ষক সমিতির কোনো হাত ছিল না। প্রতিটি মেশিন কেনা বাবদ খরচ হয়েছিল ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে যন্ত্রগুলোর ওয়ারেন্টির মেয়াদ শেষ হওয়ায় বেশিরভাগ যন্ত্রই অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
নগরকান্দা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মানোয়ার হোসেন বলেন, নগরকান্দায় ৮৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ২৫ হাজার টাকা করে একেকটি হাজিরা মেশিন ক্রয় করা হয়েছিল। এসব যন্ত্র বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা নিজেরাই কিনেছেন। তবে যন্ত্রগুলো এখন ব্যবহার করা হচ্ছে না। সবগুলো যন্ত্রই নষ্ট হয়ে আছে।
নগরকান্দা উপজেলা শিক্ষা অফিসার রওনক আরা বেগম বলেন, “হাজিরা যন্ত্র কেনার সময় আমি ছিলাম না। তবে প্রতিটি বিদ্যালয়ের হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হয়ে আছে, শুধু এটা জানি।”
সালথা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “সবগুলো হাজিরা যন্ত্র নষ্ট হয়নি। কিছু ভালো আছে। তবে যেগুলো নষ্ট হয়েছে, সেগুলো মেরামত যোগ্য নয়। আবার মেরামতের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দও নেই।”
সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. অনিছুর রহমান বালী বলেন, বিষয়টি যেহেতু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। তাই প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।