রাজশাহীতে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী। এভাবে রোগী বাড়তে থাকলে সেবা দেওয়া দুরূহ হয়ে যাবে। এ কথা জানিয়ে জরুরি ভিত্তিতে সচেতনতা বাড়ানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল (রামেক) কলেজ হাসপাতালের পরিচালক।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪ ঘণ্টার ডেঙ্গু রিপোর্টে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন করে আরও ৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। নতুন ও পুরোনো মিলিয়ে রামেক হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে এখন মোট ১৭ জন রোগী ভর্তি আছেন।
এরই মধ্যে রাজশাহীতে মিলেছে ভয়ংকর এডিস মশার লার্ভা। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১৭ জন ডেঙ্গু রোগী।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক জরুরি বার্তা দিয়ে এ চিঠি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, গত ১৫ জুন থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত ৫৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন রামেকে। এরমধ্যে ৪৯ জন ডেঙ্গু রোগীই ঢাকা ভ্রমণকারী। ওই হাসপাতালে বিশেষায়িত ওয়ার্ড প্রস্তুত করে ডেঙ্গু রোগীদের প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ যথাযথ চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে। জটিল ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আইসিইউসহ অন্যান্য চিকিৎসা সেবাও প্রস্তুত রয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ জানান, এতদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের বেশিরভাগই ঢাকার ছিলেন। তাদের কেউ ঢাকায় থাকতেন আবার কেউ কেউ ঢাকা ভ্রমণ করেছেন। এভাবে ডেঙ্গু রোগী বাড়লে তা সামাল দেওয়া দুরূহ হয়ে পড়বে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখনই সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্যই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এএফএম আঞ্জুমান আরা বেগম বলেন, “চিঠি আমি এখনও হাতে পাইনি। তবে রাজশাহীতে ডেঙ্গু নেই। যে কয়েকজন রোগী ভর্তি আছেন তারা সবাই ঢাকা ফেরত। রাজশাহীর ৩-৪ জন রোগীর কথা বলা হচ্ছে। তবে দুইজন ছাড়া অন্যরা বাইরের বলেই জানি। আর পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাসিক শুরু থেকেই সতর্ক রয়েছে।”
রাজশাহীর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার জানান, বছরের শুরুতেই রাজশাহী বিভাগে ডেঙ্গু রোগী ধরা পড়ে। বর্তমানে বিভাগের আট জেলায় মোট চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ১৭ জন। এর মধ্যে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১৫ জন। তাই সিটি করপোরেশন র্যানডম সিলেকশনের মাধ্যমে এলাকার ৭৫টি বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এতে এজিপ্টাই মশার লার্ভা বেশি পাওয়া গেছে। আর এজিপ্টাই এবং এলবোপিক্টাস এ দুই প্রজাতির লার্ভাই মিলেছে। তাই লার্ভা ধ্বংসে জনস্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনকে শিগগিরই চিঠি দেওয়া হবে।