ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে নোয়াখালীর উপকূলে ঝড়বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বিরাজ করছে। এ অবস্থায় নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াসহ উপকূলীয় তিনটি উপজেলার ৪০১টি আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ৬ হাজার ১৩৪ জন লোক আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এদিকে বিপন্ন অবস্থায় আছে নিঝুম দ্বীপের হরিণ।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, হাতিয়াতে ১ লাখ ৫ হাজার ৬৩৪ জন লোক আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। এর মধ্যে উপজেলার সোনাদিয়া, নিঝুমদ্বীপ, চরঈশ্বর ও হরনী ইউনিয়নের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে বেশি লোকজন অবস্থান নিয়েছেন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ৫ শতাধিক লোক ও সুবর্ণচর উপজেলায় খুবই সামান্য লোক আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। কবিরহাট উপজেলায় তেমন লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে আসেনি। হাতিয়াতে ২৯ হাজার ৩২২টি গবাদিপশু আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জিল্লুর রহমান জানান, নিঝুমদ্বীপ ও চরঈশ্বর ইউনিয়নের কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে অনেক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এদের বেশির ভাগ বেড়িবাঁধের বাহিরে ও ঢালে বসবাস করেন। হাতিয়াতে সকাল থেকে ভারী বর্ষণ ও দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। অনেক জায়গায় কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। নলচিরা ঘাটে নোঙর করা কয়েকটি মালবাহী ট্রলার ডুবে গেছে। এদিকে হাতিয়ার ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নিঝুম দ্বীপের হরিণ ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাতিয়ার ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্রের বেশিরভাগেই বিদ্যুৎ নেই। অল্পকিছুতে সৌরবিদ্যুতের আলো আছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন আশ্রয় নেওয়া লোকেরা। এরআগে নদী উত্তাল থাকায় রোববার (২৩ অক্টোবর) বিকেল ৩টা থেকে হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের নৌ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
নোয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে বিভিন্ন উপজেলায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে হালকা বৃষ্টিপাত চলছে। আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বিকেল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালী জেলা শহরে ৬৩ মিলিমিটার এবং হাতিয়ায় ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ বৃষ্টিপাত আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অর্থাৎ ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে ৭-৮ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে।