ঈদকে সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সুন্দরবনের হরিণ শিকারীরা। ইতোমধ্যে হরিণের মাংস বাবদ গ্রাহকদের কাছে অগ্রীম টাকা নিয়ে রেখেছেন তারা। সুযোগ পেলেই ঢুকে পড়বেন বনে। তবে বন বিভাগও এবার সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
ইতোমধ্যে কয়েজন হরিণ শিকারীকে মাংসসহ আটক করেছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বনে আরও নজরদারি বাড়িয়েছে বন বিভাগ। ঈদকে সামনে রেখে হরিণ রক্ষায় এবার সুন্দরবনে কর্মরত সব কর্মকর্তা ও বনরক্ষীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সুন্দরবনের ভেতরে দায়িত্বরত বনরক্ষীদের টহল জোরদার করতে বলা হয়েছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর ঈদের সময় চোরা শিকারি চক্র সুন্দরবনে হরিণসহ বন্য প্রাণি শিকারের অপতৎপরতা চালায়। তবে প্রতি বছরের তুলনায় এবার হরিণ শিকারিদের তৎপরতা বেশি লক্ষণীয়। সোমবার (৮ এপ্রিল) সুন্দরবনের বজবজা নদীর রাজিয়ার ভারানী খাল এলাকা থেকে তিনজন হরিণ শিকারিকে হরিণ ধরার ফাঁদসহ আটক করেন বনরক্ষীরা। এসময় তাদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে বন বিভাগ।
গত এক বছরে অন্তত ৪০ জন শিকারিকে হরিণের মাংস-চামড়াসহ আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন করমজল বন্যপ্রণী কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “এবার ঈদকে সামনে রেখে হরিণের মাংস সংগ্রহে তৎপর হয়ে উঠেছে চোরা শিকাশিরা। এ জন্য এবার সুন্দরবনের সব বনরক্ষীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সেই সঙ্গে টহল জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া সুন্দরবনের সীমান্ত এলাকায় যেসব ক্যাম্প রয়েছে, সেখানে আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।”
আজাদ কবির আরও বলেন, “আমাদের কাছে তথ্য আছে, চোরা হরিণ শিকারি চক্র গ্রাহকের কাছ থেকে হরিণের মাংস বাবদ অগ্রীম টাকা নিয়েছে। এখন তারা সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য অস্থির হয়ে উঠেছে। এ কারণে আমাদের স্মার্ট টিম দিনে ও রাতে পালাক্রমে বন পাহারা দিচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য আমরা ড্রোন ব্যবহার করছি।“
সুন্দরবন সংলগ্ন মোংলার বৈদ্যমারী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য জামাল হোসেন বলেন, মাছ ধরার পাস নিয়ে বনে ঢুকে হরিণ শিকার করে এক শ্রেণির অসৎ লোক। সংঘবদ্ধ শিকারিরা সুন্দরবনের গহিনে গাছের ফাঁকে ফাঁকে দড়ির একধরনের ফাঁদ পেতে রাখে। যাতায়াতের সময় হরিণগুলো ফাঁদে আটকে যায়। তারা বনের মধ্যে হরিণ জবাই করে মাংস বানিয়ে লোকালয়ে এনে কেজি দরে বিক্রি করেন।