ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। জেলায় ৫৭৬টি আশ্রয় কেন্দ্র, ৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( রাজস্ব) আমিন আল পারভেজ জানিয়েছেন, রোববার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জেলায় ৫৭৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র, ৯ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত খাবারও মজুদ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ঝুঁকিপূর্ণদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হবে।
এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হচ্ছে। এর প্রভাবে কক্সবাজারের আকাশ সারা দিন মেঘাচ্ছন্ন ও গুমুট আবহাওয়া পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সমুদ্র উত্তাল রয়েছে।
পর্যটকদের নিরাপদ দুরত্বে থেকে সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের জন্য সতর্ক করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ, লাইফ গার্ড ও বিচ কর্মীরা।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, “দুর্যোগ পরিস্থিতির কারণে পর্যটকদের নিরাপদে চলাফেরার জন্যে নির্দেশনা রয়েছে। সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে।”
রোববার বেলা ২টা থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল পরবর্তী নির্দেশনা দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের ইউএনওর দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এরফানুল হক চৌধুরী।
জাহাজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর জানান, কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ এমবি কর্ণফুলী ৩৫০ যাত্রী নিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কক্সবাজারে পৌঁছেছে। এর আগে জাহাজটি সকালে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় সেন্টমার্টিন পৌঁছে। আবহাওয়া পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় দুপুর আড়াইটাই সেন্টমার্টিন ছেড়ে আসে জাহাজটি।
তিনি আরও জানান, “৩৫০ জন যাত্রী নিয়ে এমবি কর্ণফুলী সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কক্সবাজারে পৌঁছে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) থেকে আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকবে।”
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র, কন্ট্রোল রুম ও মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া খাদ্য, পানি ও জরুরি সেবার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবীদ আবদুল হামিদ মিয়া জানান, সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত গভীর নিম্নচাপটি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ এখন ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।