• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এক ছাদে দেশি-বিদেশি ৪০ প্রজাতির ফল চাষ


শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১৫, ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
এক ছাদে দেশি-বিদেশি ৪০ প্রজাতির ফল চাষ

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কাজিরহাট বন্দর এলাকায় ছাদবাগান করে চমক দেখিয়েছেন হিমেল মোল্লা নামের এক যুবক। তার শখের ছাদবাগানে স্ট্রবেরিসহ দেশি-বিদেশি ৪০ প্রজাতির ফলের চাষ হয়েছে। বাগানের উৎপাদিত বিদেশি জাতের এসব ফল খেয়ে স্বজন ও প্রতিবেশিরা হিমেলের প্রশংসা করছেন।

জানা যায়, হিমেল পড়াশোনা শেষ করে দীর্ঘদিন ধরে বেকার ছিলেন। করোনার সময় ইউটিউব দেখে বাড়ির ছাদে দেশি বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির ফলের বাগান করার পরিকল্পনা করেন। এরপর বিভিন্ন স্থান থেকে চারা সংগ্রহ করেন।

বর্তমানে তার বাগানে দেশি-বিদেশি প্রায় ৪০ প্রজাতির ফল গাছ রয়েছে। এসব ফলগাছের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফলন ধরেছে আর্লি গ্লো, আমেরিকান ফেস্টিবল, রাবি-৩ জাতের স্ট্রবেরি। এছাড়াও তার বাগানে ব্যানানা, ব্রুনাই কিং, মিয়াজাকি, কিউজাই প্রজাতির আম, মিশরীয়, ব্লাক জেনোয়া, সৌদি ইউলো প্রজাতির ত্বীন, পাকিস্তানি, থাই, মেক্সিকান, সুপার ভাগোয়ান, বিভিন্ন প্রজাতির আনার, বিকসন, ব্লাক রুবি, সবুজ মিস্টি, কোড-২৪ প্রজাতির আঙুর, থাইরেড, থাই গোল্ড, পিংক রোজ, ব্রুনি ও কলি মায়ারসহ প্রায় ৩৫টি জাতের ড্রাগন ফল গাছ রয়েছে।

হিমেলের বাগানে বাউ লেবু নামে একটি লেবু গাছ রয়েছে, যে গাছটিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রায় বিলুপ্ত গাছ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বছরজুড়ে বাগানের এসব গাছে ফল ধরে। এসব ফলেই হিমেলের পরিবারের ফলের চাহিদা পূরণ হয়। প্রতিদিন এই ছাদবাগান দেখতে অনেকে তাদের বাড়িতে আসেন। তার দেখাদেখি এলাকার অনেক বেকার যুবক ছাদবাগান করার পরিকল্পনা করছেন।

হিমেলের কাছ থেকে চারা নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে ফল উৎপাদনের চিন্তা করছেন রিফাত মাদবর (২৪) ও অভি হাওলাদার (২৬)। তারা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “হিমেল ভাই পড়াশোনা শেষ করে বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি-বিদেশি ফলের গাছ এনে ছাদে চাষ করেছেন। তার গাছে প্রচুর ফল হলেও তিনি বিক্রি করেন না। নিজেরা খান এবং পাড়া প্রতিবেশীকে দেন। তার বাগান থেকে চারা ও পরামর্শ নিয়ে এ বছর আমরাও বাগান করেছি। আশা করছি আর বেকার ঘুরে বেড়াতে হবে না। এসব ফল বিক্রি করে আমরা সাবলম্বী হতে পারব।”

সাকিব মোল্লা নামে এক যুবক সংবাদ প্রকাশকে বলেন, হিমেল ভাই ছোট বেলা থেকে যে কাজই করেন না কেন, তা তিনি মনোযোগ দিয়ে করেন। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য না থাকলেও তিনি গাছ গুলোর প্রতি যত্নশীল হয়েছেন বলেই সব গাছে প্রচুর পরিমাণে ফল ধরেছে। আমরা প্রায় সময়ই তার বাগানে এসে ফল খাই। বিদেশী ফলগুলো খেতে বেশ ভালোই মজা লাগে।

ছাদবাগানি হিমেল মোল্লা বলেন, “প্রথমে আমি আম গাছ দিয়ে শুরু করেছিলাম। ধীরে ধীরে বাগানের প্রতি আমার আগ্রহ বেড়েছে। এরপর আমি বিভিন্ন প্রকার গাছের চারা সংগ্রহ শুরু করি। আমার বাগানের স্পেশাল হলো স্ট্রবেরি। এ বছর অনেক ভালো ফলন হয়েছে। এগুলো আমি বিক্রি করি না। পরিবার, আত্মীয় স্বজন ও প্রতিবেশীদের দিয়ে দেই। ফলগুলোর একটি অংশ আমি পাখির জন্য রেখে দেই। পাখি ফলগুলো খেলে আমার ভালো লাগে। বিদেশে চলে যাব বলে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছি না। চাইলে যে কেউ ছাদবাগান করে মাসে লাখ টাকা আয় করতে পারে।”

বড় কান্দি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মামুন মোল্লা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “হিমেল বেকার ছিল। পরে সে ছাদে বাগান করে তার সময় কাটিয়েছে। স্ট্রবেরি ফল দেখতে অনেক সুন্দর, খেতেও মজা। হিমেলের বাগানের ফল খেতে বেশি মজা, কেন না তার বাগানের ফলে কোনো কেমিক্যাল নেই। যদিও হিমেল বাগানের ফল বিক্রি করে না। হিমেলকে দেখে বেকার যুবকরা অনুপ্রাণিত হয়ে সাবলম্বী হতে পারে।”

Link copied!