চট্টগ্রামে ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখার লকারে রাখা এক গ্রাহকের ১৪৯ ভরি স্বর্ণের গয়না উধাও হয়ে গেছে।ঘটনাটি ২৯ মে দুপুরে ঘটলেও বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ পায় রোববার (২ জুন)। এদিকে সোনা গায়েবের ঘটনা প্রকাশের পরই ইসলামী ব্যাংকের শাখাটিতে ভিড় করতে শুরু করেন উদ্বিগ্ন গ্রাহকেরা। তারা শাখাটির লকারে নিজেদের গচ্ছিত সম্পদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেক গ্রাহক ইসলামী ব্যাংকের চকবাজার শাখায় এসে নিজেদের লকারের খোঁজখবর নেন। আবার অনেকে ব্যাংকের সুরক্ষিত লকার থেকে স্বর্ণ গায়েবের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
একটি নিউজ চ্যানেলে সোনা গায়েবের সংবাদ দেখে তড়িঘড়ি করে চকবাজার শাখায় আসেন এক গ্রাহক। তিনি নিজের লকার চেক করে দেখেন, তার গচ্ছিত সম্পদ ঠিকঠাক আছে কিনা। ওই গ্রাহক গণমাধ্যমকে বলেন, “টিভিতে দেখলাম, দেড় শ ভরি স্বর্ণ চুরি হয়ে গেছে। খবর দেখে আমি অফিস থেকে ব্যাংকে চলে আসছি। আমার জীবনের সব সঞ্চয় এখানে। সংবাদ শুনে ভয় পেয়ে গেছি।”
আরেক নারী গ্রাহক বলেন, “খবরে পড়ছি, লকার থেকে স্বর্ণ গায়েব হয়ে গেছে। শুনে আমি এখানে (ব্যাংকে) চলে আসছি। আমি আমার আমানত ফেরত চাইব। আমার ছোট একটি লকার আছে।”
আরেক উদ্বিগ্ন গ্রাহক বলেন, “নিউজে দেখলাম লকারে চুরি হয়েছে। নিউজ শুনেই ব্যাংকে আসছি, আমার লকার ঠিক আছে কিনা দেখতে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নগরীর বেভারলি হিল এলাকার বাসিন্দা ও ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক রোকেয়া বারী ব্যাংকের একটি লকারে প্রায় ১৪৯ ভরি স্বর্ণের গয়না রেখেছিলেন। গত বুধবার (২৯ মে) লকার ইনচার্জের সঙ্গে লকার রুমে প্রবেশ করে তিনি দেখতে পান, তার লকারটি খোলা এবং সেখানে কোনো গয়না নেই।
রোকেয়া বারীর ছেলে ডাক্তার রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক বলেন, “মা ২০০৭ সাল থেকে এই শাখায় তার স্বর্ণের গহনা রাখার জন্য লকার ব্যবহার করে আসছেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ব্যাংকে গিয়ে লকার রুমের ইনচার্জকে তার লকার দেখার অনুরোধ করেন। তারা দুজন লকার রুমে প্রবেশ করেন। তখন ইনচার্জ প্রথমে দেখেন যে মায়ের লকারটি খোলা। আমার মা লকারটি পরীক্ষা করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান।”
রিয়াদ মোহাম্মদ মারজুক আরও বলেন, “আমরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে বিষয়টি জানাই এবং চকবাজার থানার ওসি লকার রুম দেখে গেছেন। বুধবার রাতেই থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ওসি আমাদের বলেন মামলা করতে। আমরা পরিবারের আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করছি। এ বিষয়ে সোমবার (৩ জুন) আদালতে অভিযোগ দায়ের করব।”
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়ালি উদ্দিন আকবর বলেন, “লকার রুমে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক প্রমাণ সংগ্রহ করেছি। ভিকটিম ও তার ছেলে থানায় জিডি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমরা ঘটনাটির গুরুত্বের কারণে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে বলেছি।”