ফরিদপুরের মিঠাপানির বিলুপ্ত প্রায় একটি কুমির উদ্ধার করেছে বনবিভাগের প্রাণি সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের একটি উদ্ধারকারী দল।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুর সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের গজারিয়ার ভুবনেশ্বর নদ থেকে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়। কুমিরটি প্রায় ৭ ফুট লম্বা।
কুমিরটি নিয়ে দুপুরেই উদ্ধারকারী দলটি সড়কপথে সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণি উদ্ধার কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা হয়।
জানা যায়, গত বুধবার বিকেলে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের শিকদার ডাঙ্গী গ্রামের ভুবনেশ্বর নদে প্রথম কুমিরটি দেখা যায়। পরেরদিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে কয়েকবার কুমিরটি ভেসে ওঠে। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আলিয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. বকলুকার রহমান জানান, কুমির দেখার খবর পেয়ে থানা ও বন বিভাগকে বিষয়টি জানানো হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার মানুষকে সাবধান করে। সতর্ক করে বিভিন্ন মসজিদ থেকে মাইকিংও করা হয়।
খুলনা থেকে আসা প্রাণি সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের প্রাণি বিশেষজ্ঞ মফিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, কুমিরটি উদ্ধারে গত রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুরের সদর উপজেলার পাটপাশা এলাকায় পরিদর্শনে যায় উদ্ধারকারী একটি দল। তবে সেখানে কুমিরের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে মঙ্গলবার দুপুরে গজারিয়ায় ব্রিজের নিকট ভুবনেশ্বর নদে কুমিরটি দেখে সেটি উদ্ধার করা হয়।
মফিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, উদ্ধার হওয়া কুমিরটি মিঠা পানির একটি বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির কুমির। প্রায় সাত ফুট লম্বা এটি। কুমিরটি প্রথমে সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণি উদ্ধার কেন্দ্রে নেওয়া হবে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০২১ সালের ৯ আগস্ট ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে পদ্মা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত একটি খালে মিঠা পানির একটি কুমির পাওয়া গিয়েছিল। কুমিরটি সাত দিন ধরে ওই জলাধারে অবস্থান করেছিল। পরে সেটিকে ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পাঠায় প্রাণি সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ। এরপর গত বছরের আগস্ট মাসে সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের মনসুরাবাদ গ্রামে ভোরে মুরগির ছটফটের শব্দ পেয়ে খোপের কাছে গিয়ে কুমিরের কামড়ে পায়ে ও হাতে জখম হন।
২০০০ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসারভেশন অব নেচার বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে মিঠা পানির কুমির বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে।