কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় মিধিলির তাণ্ডবে গাছ উপড়ে, নৌকাডুবে ও ঘরের দেওয়াল চাপায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। সেই সঙ্গে ব্যাপক ফসলের ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরের পর কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়টি। এর আগে গত দুই দিন ধরে কক্সবাজারে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিতে শুক্রবার ভোরে টেকনাফের হ্নীলায় ঘরের দেওয়াল চাপা পড়ে একই পরিবারের চারজন নিহত হন।
নিহতরা হলেন, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মৌলভীবাজারের মরিচ্যাঘোনা এলাকার ফকির আহমদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৫০), তার ছেলে সাইদুল মোস্তফা (২০) ও মেয়ে নিলুফার বেগম (১৮) ও সাদিয়া বেগম (১১)।
অপরদিকে নিহত হন, সাঈদ মাহমুদ ও আমির হোসেন কামাল। সাঈদ মহেশখালী উপজেলার কালামারছড়া ইউনিয়নে নিজ বাড়িতে গাছ উপড়ে ও কামাল সদরের চৌফলদন্ডি এলাকায় নদীতে নৌকা ডুবে মারা যান।
অপরদিকে সন্ধ্যায় সদর উপজেলার চৌফলদন্ডি এলাকায় সাগর থেকে ফেরার সময় নৌকাডুবে আমির হোসেন কামাল নিখোঁজ ছিলেন, পরে শনিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ কবির হোসেন জানান, ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে ঝড়ের আঘাতে মহেশখালীতে ২০ হেক্টর পানের বরজ, ১৪৫ হেক্টর আমন ধান, ১৮০ হেক্টর শীতকালীন আগাম শাকসবজি ১১ হেক্টর সরিষা ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে শনিবার থেকে টেকনাফ সেন্টমার্টিন নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সকাল ১০টার দিকে কেয়ারি সিন্দাবাদ নামের একটি জাহাজ টেকনাফ ছেড়ে যায়।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী জানান, দুই দিন ধরে সেন্টমার্টিন দ্বীপে অবস্থান করা পর্যটকদের জাহাজে করে শনিবার বিকেলে টেকনাফে নিয়ে আসা হবে। সাগরে প্রথমে নিম্নচাপ পরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ায় গত দুদিন সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
এদিকে, শনিবার ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে গভীর সাগরে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়া ৩২ জন মাঝি-মাল্লা জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দুটি ফিশিং ট্রলারও উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড।