• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অজানা রোগে মারা যাচ্ছে গরু, বিপাকে খামারিরা


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৪, ০৫:২১ পিএম
অজানা রোগে মারা যাচ্ছে গরু, বিপাকে খামারিরা

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনয়নের মশালডাঙ্গী গ্রামে অজ্ঞাতনামা রোগে প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে গবাদিপশু গরু। এমন ঘটনায় দুশ্চিন্তা ও আতঙ্কে দিন পার করছেন দুই গ্রামের খামারিরা।

জানা যায়, ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা মশালডাঙ্গী গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী ৪ নম্বর কলোনিতে গত দুই মাসে ২০ জন কৃষকের অর্ধশত গরু মারা গেছে। এর মধ্যে গত এক সপ্তাহে মারা গেছে ১৯টি গরু।

বুধবার (২৭ মার্চ) স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন অজ্ঞাতনামা এই রোগে গরু আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্ত হওয়ার ৬-১০ ঘণ্টার মধ্যে মারা যাচ্ছে। রোগ নির্ণয় না করতে পারার কারণে কোনো ধরণের চিকিৎসা কাজে আসছে না।

গত দুই দিনে দুটি গরু মারা গেছে কৃষক আব্দুল জলিলের। তিনি বলেন, “অনেক কষ্ট করে গরু লালন পালন করি। গরু বিক্রি করে মেয়ের বিয়ে দেব ভেবেছিলাম। কিন্তু সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেল।”

রোগের লক্ষণ সম্পর্কে আব্দুল জলিল বলেন, “প্রথমে গরুর শরীর গরম হয়ে যায়, এরপরে পেট ফুলে গিয়ে খাওয়া দাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এমন করে ৬-১০ ঘণ্টার মধ্যে মারা যায় গরু। এক লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়ে গেল আমার। আরও দুটা গরু আছে, সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না।”

আইয়ুব আলী নামের আরেক কৃষক বলেন, “সীমান্ত ঘেঁষা এই দুটি গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ গরু পালন ও কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। গরু বিক্রি করে কৃষি কাজ, ছেলে মেয়ের পড়াশোনা, বিয়ে ইত্যাদি সকল খরচ বহন করি। সীমান্তে চারণ ভূমি থাকায় গরু পালনে বেশ সুবিধা রয়েছে। দুই গ্রামে অন্তত দেড় হাজার গরু পালছেন স্থানীয় কৃষকরা। গত দুই মাসে অর্ধশত গরু মারা গেছে এই দুই গ্রামে। অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছেন।”

বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম জানান, গ্রাম দুটোর একদম কাছাকাছি ভারতের সীমান্ত। সব পরিবারে গরু লালন পালন করে থাকে। কয়েক দিন ধরে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত কারো না কারো গরু মারা যাচ্ছে।”

এ ব্যাপারে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা নাসিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা সরেজমিনে সেই দুটি গ্রামে গিয়েছিলাম। এক সপ্তাহে বেশ কয়েকটি গরু মারা গেছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের বাদলা ভাইরাস মনে হয়েছে। এছাড়া সীমান্তে লালন পালন হওয়ায় এটি ভারত থেকে আসা কোনো ভাইরাস হতে পারে। আমরা কিছু গরুকে বাদলা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদান করেছি। আর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করে চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করা হবে।”

Link copied!