লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের প্রকল্প ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের অফিস ভাঙচুরের মামলায় চেয়ারম্যানসহ ১২ জনের জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (১৯ মার্চ) সকালে লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক ইকবাল হাসান তাদের জামিন নামঞ্জুর করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরের বরাদ্দের টিআর ও কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পের ভাগাভাগি নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সরকারি বরাদ্দের ৮০ শতাংশ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও বাকি ২০ শতাংশ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে উপজেলা পরিষদ। ২০ শতাংশ পান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দুজন ভাইস চেয়ারম্যান।
২০২২-২৩ অর্থবছরের টিআর ও কাবিখা-কাবিটা প্রকল্পের উপজেলা পরিষদের বরাদ্দের ২০ শতাংশের ভাগাভাগি নিয়ে গত বছরের ৭ নভেম্বর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনের অফিসে দুই ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার ও আনোয়ার হোসেন মিরুর সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়।
এ সময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার উপজেলা চেয়ারম্যানকে গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন অফিস থেকে চলে যান। পরে উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকরা এসে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহারের অফিস ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ ঘটনায় ওই দিন (৭ নভেম্বর) রাতেই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনকে প্রধান করে আটজনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৪-১৫ জনের বিরুদ্ধে হাতীবান্ধা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার। মামলাটি হাতীবান্ধা থানায় নথিভুক্ত না করায় গত বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেন তিনি।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে হাতীবান্ধা থানাকে নির্দেশ দেন। এরপর হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি নথিভুক্ত করে পুলিশ।
এ ঘটনায় হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন গত বছরের ২০ নভেম্বর হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন পান। এরপর নিম্ন আদালতে হাজির হলে আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জামিন মঞ্জুর করেন। মামলার বাদী হাতীবান্ধা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করেন।
লালমনিরহাট জেলা কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক নুরুজ্জামান বলেন, হাতীবান্ধার একটি মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১২ জনের জামিন নামঞ্জুর করে আদালত জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।