• ঢাকা
  • বুধবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আ.লীগ নেতার বাধায় বন্ধ শৌচাগার নির্মাণ কাজ


ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১০, ২০২৪, ০৫:২০ পিএম
আ.লীগ নেতার বাধায় বন্ধ শৌচাগার নির্মাণ কাজ
জেলার মানচিত্র

ফরিদপুরের সদরপুরে একটি বাজারের খাস জায়গায় সরকারি শৌচাগার (টয়লেট) নির্মাণে ফের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সামসুল বেপারি নামের এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এর আগেও তিনি ওই স্থানে শৌচাগার নির্মাণের কাজটি বন্ধ করে দেন।

উপজেলার চরবিষ্ণুপুর ইউনিয়নের জয়বাংলা বাজারে ওই শৌচাগারের নির্মাণ কাজ চলছিল।

স্থানীয় ও বাজারের দোকানদের অভিযোগ, শৌচাগার নির্মাণে আওয়ামী লীগ নেতার বাধার ঘটনা নিয়ে গত ১ নভেম্বর ‘সরকারি জায়গায় শৌচাগার নির্মাণে আ.লীগ নেতার বাধা’ শিরোনামে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরপরই নড়েচড়ে বসে জেলাসহ উপজেলা প্রশাসন। ঘটনাস্থলে পাঠান হয় সদরপুর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) রুবানা তানজিনকে। তিনি সার্ভেয়ার সঙ্গে নিয়ে মাপজোক করে সীমানা নির্ধারণ করে লাল পতাকা টাঙিয়ে ঠিকাদারকে কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন। তবে এসিল্যান্ড ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পরপরই সামসুল বেপারির লোকজন পতাকা তুলে ফেলে দেন। বন্ধ করে দেন শৌচাগার নির্মাণের কাজ।

সামসুল বেপারি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহর ঘনিষ্ঠজন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া তিনি জয়বাংলা বাজার কমিটির সহ-সভাপতিও।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার জয়বাংলা বাজারে হাট বসে। যে হাটে কয়েক হাজার লোকের সমাগম ঘটে। কিন্তু ওই বাজারে কোনো শৌচাগার নেই।

বাজারের খোলা খাস জায়গায় সরকারি টয়লেট নির্মাণে বাধা দেওয়ায় প্রতিকার চেয়ে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই বাজারের অর্ধশতাধিক সাধারণ দোকানদার।

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জয়বাংলা বাজার কমিটির সহ-সভাপতি সামসুল বেপারি। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা নন বলে জানান। তিনি দাবি করেন, তিনি এখন বিএনপির রাজনীতি করেন।

সামসুল বেপারি বলেন, “আমি আমার ব্যক্তিগত জায়গায় দোকান নির্মাণ করেছি। আমি কোনো সরকারি খাস জমি দখল করিনি। এছাড়া টয়লেট নির্মাণেও কোনো বাধা দেইনি। এসব আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ।”

এ ব্যাপারে শৌচাগার নির্মাণকারী ঠিকাদার সুজন দত্ত বলেন, “ওই বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী ও দোকানদার জানিয়েছেন সামসুল বেপারি সরকারি খাস জমি দখল করে দোকানের কিছু অংশ ও সরকারি টয়লেটেরও কিছু অংশ দখল করে নিয়েছেন। তাই জায়গা সংকুলানে স্ট্রাকচারের ডিজাইন জটিলতা হওয়ায় কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। আমার ৬ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি ক্ষতিগ্রস্ত। পুনরায় কাজ করতে গেলেও বাধার মুখে বন্ধ রাখতে হয়েছে।”

সদরপুর উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) রুবানা তানজিন বলেন, “আমি সার্ভেয়ারকে সঙ্গে নিয়ে মাপজোক করে লাল পতাকা টাঙিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দিয়ে আসি। সাথে কাজ শুরু করতেও বলা হয়। তবে পতাকা তুলে ফেলা ও কাজ বন্ধ থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। আমি দ্রুতই ঘটনাস্থলে সার্ভেয়ার পাঠিয়ে খোঁজ নিচ্ছি।”

এ ব্যাপারে সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মামুন বলেন, ‍‍`বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। এব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাজও শুরু করা হবে।‍‍`

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা বলেন, “ওই স্থানে দ্রুতই শৌচাগারের কাজ শুরু করতে ইউএনওকে নির্দেশ দেওয়া হবে।”
 

Link copied!