• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শীতের তীব্রতায় ফসলের ক্ষতির শঙ্কা


নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৪, ০৪:১৬ পিএম
শীতের তীব্রতায় ফসলের ক্ষতির শঙ্কা
শীতের তীব্রতায় ফসলের ক্ষতির শঙ্কা। ছবি : প্রতিনিধি

দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো নওগাঁয় কয়েকদিন ধরে অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। আরও দুই-তিনদিন তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে। একই সঙ্গে আগামী সপ্তাহে রয়েছে হাল্কা ও মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস, যা ভাবিয়ে তুলেছে কৃষকদের। 

মাঠে এখন রবি ফসল। সাধারণত আলু, গম, ভুট্টা, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচসহ শীতকালীন সবজি ও বিভিন্ন ধরনের ডাল, তেলবীজ উৎপাদন এবং বোরোর বীজতলা তৈরি হয় এ মৌসুমে। ফলে এ সময়ে ঘন কুয়াশা ও বৃষ্টিপাত হলে শীতনির্ভর এসব ফসলে বিভিন্ন পোকামাকড় ও ছত্রাক সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

নিয়ামতপুরের কৃষক সজল ও আপন হোসেনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, চলতি বছর আলুর মৌসুমের শুরুতে টানা বৃষ্টির কারণে ক্ষতির মুখে পড়েন তারা। এরপর কুয়াশার কারণে বিভিন্ন রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ে আলু, পেঁয়াজ ও সরিষায়। এ সময়ে বৃষ্টি হলে বিশেষ করে আলু ও টমেটোচাষিদের বেশি ক্ষতির ঝুঁকি থাকে। এ কারণে অনেকেই নির্ধারিত সময়ের আগে অপরিণত আলু বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

নওগাঁর কৃষি উদ্যোক্তা করিম ইসলাম বলেন, আলু চাষের শুরুর দিকে একবার বৃষ্টিতে কৃষকের লোকসান হয়েছে। তখন আবার নতুন করে আলু আবাদ করা হয়। এখন আবার কুয়াশার কারণে ফসলে রোগবালাই দেখা দিচ্ছে। সামনে আবার বৃষ্টি হতে পারে। এ কারণে কৃষক আগেভাগেই আলু তুলে ফেলছেন।

আবহাওয়াবিদরা জানান, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে এলেই সাধারণত শীত বেশি লাগে। আবার দিনে সূর্যের আলো কম আসায় তাপমাত্রা তেমন ওঠানামা করে না। বর্তমানে গত দু-তিনদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো নওগাঁয় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। আগামী ১৭ জানুয়ারি থেকে আকাশ মেঘলা হয়ে উঠতে পারে। এমনকি ১৭-১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে।  

এ বিষয়ে বদলগাছি আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবীর বলেন, শীতকালে এমনিতেও হালকা বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টি বেশি হলে সমস্যা হয়। পূর্বাভাস অনুযায়ী হালকা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। আবার বর্তমানে টানা কুয়াশার কারণে আলুর মধ্যে রোগবালাই দেখা দিতে পারে। তবে বৃষ্টির যে সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে তাতে ফসলের খুব বেশি ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা নেই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) খলিলুর জানান, ঠাণ্ডা বেশি থাকলে পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকে। কিন্তু বৃষ্টি হলে পচনজাতীয় রোগ বেড়ে যেতে পারে। আলু, টমেটোতে লেট ব্লাইট ও আর্লি ব্লাইট রোগের শঙ্কা রয়েছে। অন্যান্য সবজিরও রোগ দেখা দিতে পারে। এছাড়া গোড়া পচা রোগ দেখা দিতে পারে। আবার পানি জমে গেলে ঢলে পড়া রোগ বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে আগেই স্প্রের মাধ্যমে পচনরোধী ছত্রাকনাশক দিতে হবে। আর পানি যেন জমিতে না জমে সেজন্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখতে হবে। বীজতলা থাকলে তার ওপর ছাউনি দিয়ে দিতে হবে।

Link copied!