• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১, ৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

কুমিল্লায় প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম


কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৪, ০৫:২৮ পিএম

কুমিল্লায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। বর্তমানে বুরবুড়িয়া এলাকায় ভাঙন প্রায় ৪০০ ফুট ছাড়িয়েছে। অস্বাভাবিক স্রোতে প্রতিনিয়ত তলিয়ে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। স্বেচ্ছাসেবীরা জানিয়েছেন, ভাঙন কবলিত গ্রামগুলোর প্রায় ৩০ শতাংশ লোক আটকা পড়ে আছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জমান জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে ওই স্থানের নিচ দিয়ে পানি বের হচ্ছিল। স্থানীয় লোকজন বালুর বস্তা ফেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু রাত পৌনে ১২টার দিকে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকতে থাকে। যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি।

বাঁধ ভেঙে বুড়বুড়িয়া, খাড়াতাইয়া, নানুয়ারবাজার, কিং বাজেহুরা, মিথিলাপুর, শিকারপুর, মহিষমারা, ইছাপুরা, পয়াত, গাজীপুর, কণ্ঠনগর, মাওরা, গোপীনাথপুর, জগৎপুর ও গোসাইপুর গ্রামগুলো প্লাবিত হয়। এসব এলাকার ঘরবাড়ি ও স্থাপনা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নদীর বাঁধে আশেপাশের শতাধিক পরিবার ঘর থেকে তাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু নিয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।

শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বুড়বুড়িয়া গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা আতঙ্কে রয়েছেন।

বুড়বুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সংবাদকর্মী গোলাম কিবরিয়া জানান, তার বাড়িঘর সব পানিতে তলিয়ে গেছে।

বুড়বুড়িয়া গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানান, রাত সাড়ে ১১টায় নদীর পানি হঠাৎ ঘূর্ণন শুরু হয়। তারপর বাঁধ ভাঙতে শুরু করে। প্রথমে বাঁধটি ১০ ফুটের মত ভাঙে। তারপর ২০ ফুট করে বড় আকারে ভেঙে পরে। শুক্রবার বিকাল ৪টায় সর্বশেষ খবর অনুযায়ী এ ভাঙন ৪০০ ফুট ছাড়িয়েছে।

নানুয়ার বাজার গ্রামের গৃহবধূ আইরিন আক্তার বলেন, তার ১২ বছরের সংসারটা সাজানো গোছানো ছিলো। পানি সব নিয়ে গেলো।

সোমা রানী বলেন, কোলের বাচ্চাটা নিয়ে সারা রাত না ঘুমিয়ে ছিলেন। বাড়িঘর সব ডুবে গেলো পানিতে।

গোমতীর বাঁধের ভান্তি, কামারখাড়া, বালিখাড়া অংশে পাঁচ শতাধিক পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। শিশুরা আতংকিত অবস্থায় আছে। বন্যা আক্রান্ত পরিবারগুলোর মাঝে দ্রুত খাবার পানি শুকনো খাবার প্রয়োজন।

বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাহিদা আক্তার জানান, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে ষোলনল, পীরযাত্রা পুর, সদর, ইউনিয়নসহ আশ পাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হচ্ছে। লোকজনকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে এলাকায় মাইকিং করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলেন, ১৯৯৭ সালে গোমতীর পানি বিপদসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। কিন্তু গত দুই দিনে পানি বাড়ার হিসাব অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে বৃহস্পতিবার বিকেলে ১১৩ বিপৎসীমার সেন্টিমিটার অতিক্রম করে।

Link copied!