মাত্র ৬৮ জন কর্মকর্তা কর্মচারী দিয়ে চলছে কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। ২১৯ জন স্থায়ী জনবল থাকার কথা থাকলেও এই বোর্ডে ১৫১টি পদ শূন্য বলে জানিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। তিন ভাগের এক ভাগ জনবল দিয়ে ৬ জেলার একটি শিক্ষা বোর্ড পরিচালনা করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের। এক এক জন অতিরিক্ত সর্বোচ্চ তিনটি দায়িত্বও পালন করছেন।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জামাল নাসের জানান, ১৯৮৪ সালের পর কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে আর আনুষ্ঠানিক নিয়োগ হয়নি। এরপর থেকে জনবল কমতে কমতে এখন ৬৮ জনে গিয়ে ঠেকেছে। কিছু কিছু কাজ আউট সোর্সিং করে করানো হচ্ছে। কিন্তু গোপনীয়তা রক্ষার কারণে অনেক কাজ বাইরের লোকজন দিয়ে করানো ঝুঁকি মনে হওয়ায় সবাইকে সব কাজ দেয়াও যাচ্ছে না। কর্মকর্তা কর্মচারীরা চাপ নিয়েই সফল ভাবে বোর্ডের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
১৯৬২ সালে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড স্থাপিত হয়। বুধবার (২ নভেম্বর) ৬০ বছর পূর্তি পালন করেছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। অথচ দিনের পর দিন এই বোর্ড কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত চাপ নিয়ে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। যে হারে লোকবল কমে আসছে তা সাধারণ কার্যক্রমকে শিগগিরই ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা করছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
শিক্ষা বোর্ডের উপ-সচিব (প্রশাসন) এ. কে. এম. সাহাবউদ্দিন জানান, মোট ১৫১টি শূন্য পদের মধ্যে ৬৮টি নিয়োগযোগ্য এবং ৮৩টি পদোন্নতি যোগ্য। প্রথম শ্রেণির অনুমোদিত পদের সংখ্যা ২৪টি, যার মধ্যে কর্মরত ১৯ জন। দ্বিতীয় শ্রেণির ১৯টি পদের মধ্যে ১৩ টিতে কর্মরত জনবল রয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির ১১৫টি পদের মধ্যে কর্মরত পদের সংখ্যা মাত্র ১৩টি। চতুর্থ শ্রেণির ৬১টি পদের মধ্যে ২৩টিতে কর্মরত জনবল রয়েছে।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা উপ-নিয়ন্ত্রক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, “মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক শাখায় জনবল প্রয়োজন অন্তত ১৫ জন। কিন্তু এখানে আছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, উপ-নিয়ন্ত্রকসহ মাত্র তিনজন স্থায়ী জনবল। আমি নিজেও দুইটি শাখার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নেই বললেই চলে। আমরা যে কাজ করি তাতে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। তাই সবাই সর্বোচ্চ চাপ নিয়েই তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করছেন।”
১৯৬২ সালে যখন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন মাত্র ২৭টি কলেজ এবং ৫৩২টি মাধ্যমিক স্কুলের দায়িত্ব পালন করে এই প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে ৪২৬টি কলেজ এবং ১৯৬৫টি মাধ্যমিক স্কুলের দায়িত্ব পালন করছে কুমিল্লা বোর্ড।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক জামাল নাসের বলেন, “আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে পালন করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন তা আমরা সুচারুভাবে পালন করছি। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা, তত্ত্বাবধান, নিয়ন্ত্রণ এবং পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বগুলো আমরা পালন করে থাকি। এছাড়া ম্যানেজিং কমিটি, স্বীকৃতি, ভর্তি ও পরীক্ষার সকল কাজ আমরাই করি। আশা করছি আমাদের শূন্য পদগুলোতে শিগগিরই পদায়ন হবে। সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”