গাজীপুর মহানগরে বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাসায় ঢুকে রাবেয়া আক্তার (২১) নামের এক কলেজছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সোমবার (৮ মে) রাত সাড়ে ৭টার দিকে গাজীপুর মহানগরের দক্ষিণ সালনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বাধা দিলে রাবেয়ার মা ও ছোট বোনকেও কুপিয়ে জখম করা হয়।
গুরুতর আহত রাবেয়াকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাবেয়া গাজীপুর সদর থানার দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে।
রাবেয়ার মা বিলকিস বেগম (৪৫) এবং ছোট বোন খাদিজাকে (১৪) উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তারা রাজধানী উত্তরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাইদুল ইসলাম (২৫) ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মহেশতারা গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে। সে তার বাবা-মার সঙ্গে দক্ষিণ সালনা এলাকায় থাকত।
স্থানীয়রা জানান, নিহতের বাবা আবদুর রউফ তার ছোট দুই মেয়ে খাদিজা ও জান্নাতের কোরআন শিক্ষার জন্য অভিযুক্ত সাইদুল ইসলামকে গৃহশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। বাসায় আসা-যাওয়ার সুবাদে বড় মেয়ে রাবেয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সাইদুল। পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে সাইদুলকে বাসায় আসতে নিষেধ করেন রাবেয়ার বাবা। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাইদুল রাবেয়াকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় এবং বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে। বিষয়টি সাইদুলের বাবা-মাকেও জানানো হয়।
পড়াশোনার পাশাপাশি সম্প্রতি রাবেয়া তেলিপাড়া এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেয়। কর্মস্থলে আসা-যাওয়ার পথে রাবেয়াকে প্রায়ই করত সাইদুল। বিষয়টি রাবেয়া তার বাবা-মাকে জানালে তারা সাইদুলকে সতর্ক করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়াকে প্রাণনাশের হুমকি দেয় সাইদুল।
এর জেরে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাড়ির মেইন গেট খোলা পেয়ে সাইদুল রাবেয়ার ঘরে ঢুকে হাতে থাকা ছুরি দিয়ে তার মাথায়, গলায়, পায়ে ও হাতে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। এ সময় রাবেয়ার চিৎকারে তার মা বিলকিস ও ছোট বোন হাবিবা দৌড়ে গেলে তাদেরকেও কুপিয়ে জখম করে সাইদুল পালিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশী মাহমুদুল ইসলাম তাদের উদ্ধার করে রাত সাড়ে ৮টায় গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
রাবেয়ার বাবা আবদুর রউফ বলেন, “সাইদুল আমার বড় মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলে আমরা সরাসরি না করে দিই। যার কারণেই সে বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।”
গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার (৯ মে) সকালে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তাক্ত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।