নাটোরের গুরুদাসপুরে ধর্ষণের শিকার এক চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিবেশী দাদা জাহিদুল খাঁকে (৫৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাতে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাহিদুল খাঁ নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের বাসিন্দা।
শনিবার (২৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক রিয়াজ শাহরিয়ার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
র্যাব-৫ এর অধিনায়ক জানান, ওই এলাকায় আসামির ছেলের শ্বশুরবাড়ি। সেখানেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে।
ভুক্তভোগী শিশুর দাদি ও মামলার বাদি জানান, তার তিন ছেলের মধ্যে ছোট ছেলের ঘরের ওই নাতনি স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। তার প্রকৃত বয়স ১২-১৩ বছর। মেয়ের বাবা-মা পৃথক সংসার করায় ওই নাতনি তার কাছেই থাকে। তিনি মাঠে কাজ করে সংসার চালান।
তিনি জানান, অভিযুক্ত জাহিদুল খাঁ প্রতিবেশী সম্পর্কে দাদা হয়। সে প্রায়ই তার সঙ্গে অশ্লীল কথা বলতেন। বিষয়টি জানতে পেরে শিশুর দাদি ওই প্রতিবেশীকে বকাঝকা করে তার নাতনির সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেন। ঘটনার কিছুদিন পর গত বছরের নভেম্বর মাসে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন প্রতিবেশী দাদা। এই ঘটনা কাউকে জানালে তাকে হত্যার হুমকি দেন।
তিনি আরও জানান, ঘটনার প্রায় ৬ মাস পর মেয়েটির শরীরের নানা পরিবর্তন হলে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বিষয়টি খুলে বলে। এরপর ডাক্তারি পরীক্ষার পর অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গত ১৮ জুন থানায় মামলা করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাহিদুল ইসলাম জানান, রিপোর্ট অনুযায়ী ৮ সেপ্টেম্বর সন্তান প্রসবের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শারীরিক অবস্থাসহ পরবর্তী নানা সমস্যা এড়াতে তার অপারেশনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবুল কালাম জানান, মেয়েটি আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। আসামিকে র্যাব সদস্যরা হস্তান্তর করলে তাকে আদালতে চালান দেওয়া হবে।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ারুজ্জামান জানান, ওই মামলায় যাতে ভুক্তভোগী ন্যায়বিচার পায় এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে পুলিশ।
এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় আসামি গ্রেপ্তার হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, “উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অন্তঃসত্ত্বা শিশুটির অপারেশন খরচসহ চিকিৎসা সংক্রান্ত দায়িত্ব নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এখন থেকে সন্তান প্রসব পরবর্তী মেয়েটিকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবারও উপজেলা প্রশাসন সরবরাহ করবে। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী যাতে ন্যায়বিচার পায় সে বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।”