বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে ছুটির কথা বলে অফিস ছেড়ে চলে গেছেন ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে ফরিদপুর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহ্ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা টিপুর কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে ছুটির কথা বলে তিনি চলে যান।
এর আগে এদিন সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা সিভিল সার্জন ছিদ্দীকুর রহমানের অফিসে গিয়ে তার সময়কালের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাখ্যা চান। একই সঙ্গে তার অধীনস্ত ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) গণেশ কুমার আগরওয়ালা, জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর বজলুর রশিদ ও সিভিল সার্জনের প্রধান সহকারী সরদার জালাল উদ্দীনের পদত্যাগ দাবি করেন।
সিভিল সার্জন ছাড়াও ওই তিন কর্মকর্তা-কর্মচারির বিরুদ্ধে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার দাপটে দীর্ঘদিন একই জায়গায় চাকরি করার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ।
অন্যদিকে, সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমানের বিরুদ্ধেও রয়েছে সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ ফরিদপুরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে অবৈধভাবে লাইসেন্স দেওয়াসহ সেখান থেকে অর্থ আদায় ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ।
সিভিল সার্জন চলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. শাহ্ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা টিপু। তিনি বলেন, “সিভিল সার্জন ছিদ্দীকুর রহমান স্যার দুপুরে আমার ওপর দায়িত্ব দিয়ে ছুটির কথা বলে অফিস ছেড়েছেন।”
বদরুদ্দোজা টিপু আরও বলেন, “তিনি (সিভিল সার্জন) ঢাকায় একটি ট্রেনিংয়ে যাবেন বলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি নিয়েছেন।”
এদিকে সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দীকুর রহমানের অফিস থেকে এভাবে চলে যাওয়াকে ‘নিজ অপরাধ ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ফরিদপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবরার নাদিম ইতু।
তিনি বলেন, “সিভিল সার্জনের কাছে তার সময়ের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাখ্যা চেয়েছিলাম আমরা। কিন্তু তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। এছাড়া তার অধীনস্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা তিনজন কর্মকর্তা-কর্মচারির দুপুরে মধ্যে পদত্যাগ করার আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। কিন্তু তার কোনো কিছুর সুরাহা না করেই তিনি অফিস ছেড়ে পালিয়েছেন। এই পলায়ন প্রমাণ করে তিনি কত বড় দুর্নীতিবাজ।“
ইতু আরও বলেন, “আমরা এ দুর্নীতিবাজ সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে আগামী সপ্তাহেই আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
দুর্নীতি দমন কমিশনের ফরিদপুরের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের (দুদক) উপপরিচালক রেজাউল করিম বলেন, “আমরাও তাদের বিরুদ্ধে নানা সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য পাচ্ছি। তবে, এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। কারও যদি কোনো অভিযোগ থাকে তবে সেটা যেন আমাদের লিখিতভাবে দেন। আমরা কমিশনের অনুমোদন নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।”