অবশেষে দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত আশা পূরণ হচ্ছে চাঁদপুরবাসীর। জেলা প্রেসক্লাবের পেছনে মনোরম পরিবেশে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে প্রায় তিন একর জমির ওপর নির্মাণ হচ্ছে চাঁদপুর শিশুপার্ক।
ইতোমধ্যে পার্ক নির্মাণের জন্য অনুমোদন দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। এরপর সীমানা পিলার দিয়ে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ জন্য প্রাথমিকভাবে এই প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ কোটি টাকা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, চাঁদপুরে তেমন কোনো বিনোদনকেন্দ্র নেই। তাই অবসর সময় কাটানোর জন্য নদীর পাড়ই একমাত্র ভরসা। গত কয়েক বছর ধরে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে অবসর সময় কাটানোর জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ভিড় করে। এখানে একটি শিশুপার্ক নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন জেলার মানুষজন।
তানিয়া আক্তার নামের এক কলেজশিক্ষক বলেন, “চাঁদপুরে অবসর সময় কাটানোর জন্য ভালো কোনো জায়গা কিংবা বিনোদনকেন্দ্র নেই। শিশুদের জন্য কোনো পার্ক নেই। এই জায়গাটি যেহেতু নদীঘেঁষা, তাই পর্যটকদের আকৃষ্ট করার বিষয়টি মাথায় রেখে পরিকল্পনা গ্রহণ করলে সবচেয়ে ভালো হবে। শিশুপার্ক হলে সবার চাওয়া পূরণ হবে।”
কলেজশিক্ষার্থী আরিফুল হক বলেন, “এখানে এলে প্রাণ খুলে নিঃশ্বাস নিতে পারি, জায়গাটি খুব ভালো লাগে। পরিকল্পিতভাবে শিশুপার্ক নির্মাণ হলে সবার জন্য খুবই ভালো হবে।”
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ডাকাতিয়া নদীর পাড়ঘেঁষে পার্ক নির্মাণের জন্য ২ একর ৭৯ শতাংশ জমি অনুমোদন দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়। প্রয়োজনে আশপাশের আরও কিছু জায়গা এতে সংযুক্ত করা হবে। কিছুদিনের মধ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা (ফিজিবিলিটি স্টাডি) হবে। এই প্রকল্পে থাকবে শিশুপার্ক, বিনোদনকেন্দ্র, এমপি থিয়েটার তথা উন্মুক্ত থিয়েটার, শিশুদের নিয়মিত সাইক্লিংয়ের জন্য জায়গা থাকবে, একটি ওয়াকওয়ে, নদীর ওপরে হাটার জন্য ব্যবস্থা করা হবে। এ ধরনের অনেক কিছুই পার্কে থাকবে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. হেদায়েত উল্যাহ বলেন, “গত ১৭ জানুয়ারি এখানে শিশুপার্ক করার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পাওয়া গেছে। অর্থ বরাদ্দ হলে কাজ শুরু হবে। আপাতত স্থান নির্ধারণ করেছি। বিষয়টি সবাইকে জানানোর জন্য ওই জমিতে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছি। সেখানেই শিশুপার্ক হবে।”
জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে এই শিশুপার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, “পুরানবাজার সেতুর মুখ থেকে মুখার্জিঘাট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে ১০ কোটি টাকার প্রস্তাবনা প্রস্তুত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, জেলা পরিষদ, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। বরাদ্দ অনুমোদন হয়ে গেলে কাজ শুরু করব।”