• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ


শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৪, ০৩:৪০ পিএম
ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ছাত্রলীগ নেতার পদত্যাগ

সারা দেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে  কাজী ইসহাক নামের এক ছাত্রলীগ নেতা পদত্যাগ করেছেন। অন্যদিকে সংগঠন পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকায় তাকে বহিষ্কার করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ।

সোমবার (১৫ জুলাই) রাত সোয়া ১২টার দিকে কাজী ইসহাক তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করে ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এরপর মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে তাকে বহিষ্কার করে উপজেলা ছাত্রলীগ।

পদত্যাগ করা ছাত্রলীগ নেতা কাজী ইসহাক গোসাইরহাট উপজেলার আলাওলপুর ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্বে ছিলেন।

বেশ কয়েকদিন ধরে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে পুরো দেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষ নিয়ে কথা বলছেন। কেউ আবার কোটা সংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। বিষয়টি কেন্দ্র করে সোমবার রাতে আলাওলপুর ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী ইসহাক তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে একটি পোস্ট দিয়ে পদত্যাগ করেন। তিনি প্রথমে সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টের পোস্টে লেখেন, “ঘৃণা করি তুমাদের রাজনীতি, তুমাদের রাজনীতিতে অসংখ্য সাধারণ মানুষের রক্ত লেগে আছে।”

এর ৫ ঘণ্টা পর তার আইডিতে একটি ভিডিও শেয়ার দিয়ে স্ট্যাটাস দেন। যেখানে লেখা ছিল, “ঘৃণা করলাম সংগঠন ছাত্রলীগকে।”

এরপর এদিন রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগের লোগো সম্বলিত একটি প্যাডে পদত্যাগ করে ফেসবুকে আপলোড করেন কাজী ইসহাক। যেখানে লেখা ছিল, “যথাবিহীত সম্মান প্রর্দশন পূর্বক নিবেদন এই যে, আমি কাজী ইসহাক। হাদিস মুতাবেক, ‘দুনিয়াতে তুমি যে দল করবে আখিরাতে তুমি সেই দলভুক্ত হয়ে হাশরের ময়দানে উঠবে’। এ প্রসঙ্গে আমি বাংলোদেশ ছাত্রলীগ, আলাওলপুর ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সম্পূর্ণ স্বজ্ঞানে নিজে পদত্যাগ করলাম।”

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কাজী ইসহাক বলেন, “আমার পরিবার সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছে। বঙ্গবন্ধুর সময়কার ছাত্রলীগ সম্পর্কে পড়েছি, জেনেছি তাই আমি ছাত্রলীগকে ভালোবাসতাম। কিন্তু এখনকার ছাত্রলীগ আগের মতো নয়। এজন্য আমি নিজেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

এসময় তিনি কোটা আন্দোলনের বিষয়টি সামনে এনে বলেন, “গতকালের (১৫ জুলাই) কোটা আন্দোলন নিয়ে ঘটে যাওয়া বিষয়টি মানার মতো নয়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা অন্যায়ভাবে কিছু দাবি করলে তা দেখার জন্য প্রশাসন রয়েছে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ সরাসরি ক্ষমতা খাটাতে পারে না। যেহেতু ছাত্রলীগ সংবিধান অনুযায়ী চলছে না, তাই আমি ছাত্রলীগ থেকে পদত্যাগ করছি।”

বিষয়টি নিয়ে গোসাইরহাট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দেওয়ান আজমল হোসেন নয়ন বলেন, “কাজী ইসহাককে এর আগেও সংগঠন পরিপন্থী কার্যকলাপ করার কারণে সতর্ক করা হয়েছিল। গতকালের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমার মনে হয়েছিল, পদত্যাগের বিষয়টি কোটা আন্দোলনের না। ও মূলত উগ্র মৌলবাদী চিন্তা চেতনা থেকে এ ধরণের পোস্ট করেছে। ওর বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহসিন মাদবর বলেন, “কাজী ইসহাকের অব্যাহতি নেওয়ার বিষয়টি একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাছাড়া তার পদত্যাগে ছাত্রলীগের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। ছাত্রলীগ এশিয়ার সবচেয়ে বড় সংগঠন, এ সংগঠনে অনেকে আসবে যাবে। আবার অনেকে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের যোগদান করার জন্য অপেক্ষা করছে।”

Link copied!