বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের দুর্গোৎসবের সমাপ্তি ঘটেছে রোববার (১৩ অক্টোবর)। টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় এবার ১১ শতাধিক মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। পূজারিরা তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী দুর্গার বিসর্জন দেন। জেলা সদর, কালিহাতী, মির্জাপুর, নাগরপুর, ভূঞাপুর ও মধুপুরে মহাসমারোহে বিসর্জন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
এর ধারাবাহিকতায় জেলার কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন খেলার মাঠে বসেছে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী বিজয়া দশমীর মেলা। রোববার থেকে শুরু হয়ে মেলাটি চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদ যৌথভাবে মেলাটির আয়োজনে সহযোগিতা করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শত বছরের পুরনো এ মেলায় ইউনিয়নের মণ্ডপগুলোর দুর্গা প্রতিমা দর্শনার্থীদের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আশেপাশের কয়েকটি উপজেলার হাজার হাজার দর্শনার্থী এখানে এসেছেন প্রতিমা দেখতে। হিন্দু নারীরা সিঁদুর, ধান, দূর্বা ও আলোকবাতি দিয়ে প্রতিমাগুলোয় ভক্তি প্রদর্শন করছেন। উলুধ্বনি আর ঢাকঢোলের বাজনার তালে তালে চলে নারী-পুরুষদের চলে আরতি প্রদর্শন। পরে নারান্দিয়া, নগরবাড়ী, দৌলতপুর রায়বাড়ি ও মোদকবাড়ীর প্রতিমাগুলো মাঠের পাশে লৌহজং নদীর জলে বিসর্জন দেওয়া হয়।
এ ছাড়া মেলা উপলক্ষে মাঠে আসবাবপত্র, বাহারি খাবার, খেলনা, মাটির হাড়িপাতিল বিক্রির অসংখ্য দোকানপাট বসেছে। তিন দিনে কোটি টাকার কেনাবেচা হয়ে থাকে এ মেলায়।
মেলায় আসা পলাশ কর্মকার বলেন, “আমি তিন বছর ধরে এ মেলায় আসি। সবাই মিলে অনেক আনন্দ করি। এখানে নানা ধরণের বাহারি খাবার ও খেলনা পাওয়া যায়।”
প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সার্বিক সহযোগিতা করেন।
মেলার শুভেচ্ছা মঞ্চে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরামের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন, কালিহাতী সার্কেলের এএসপি আব্দুল্লাহ আল ইমরান, নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ তালুকদার, ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহর আলী, নারান্দিয়া ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গুপিনাথ মোদক ও সাধারণ সম্পাদক রানা সরকার প্রমুখ।