• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কাদের মির্জা, সাবেক ইউএনওসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন


নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৪:১৩ পিএম
কাদের মির্জা, সাবেক ইউএনওসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন

১০ বছর আগে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে জামায়াতের ৪ নেতাকর্মীকে হত্যার ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুল কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামানসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিহত জামায়াত কর্মী সাইফুল ইসলামের বড় ভাই মোহাম্মদ আমিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন।

মামলায় কাদের মির্জা, সাবেক ইউএনও ছাড়াও কোম্পানীগঞ্জ থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া, (এসআই) আবুল কালাম আজাদ, শিশির কুমার বিশ্বাস, উক্যসিং মারমার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় ১০০-১৫০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

কোর্ট ইন্সপেক্টর শাহ আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নোয়াখালীর ২নং আমলি আদালতের বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে এ ঘটনায় পূর্বের কোনো মামলা আছে কিনা তা আদালতকে অবহিত করতে কোম্পানীগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলা না থাকলে নিয়মিত মামলা হিসেবে (এফআইআর) রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়েছেন।  

মামলার আবেদনের উল্লেখ করা হয়, মামলার বাদী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার জামায়াত ইসলামীর একজন কর্মী। ২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর শনিবার জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার অবৈধ ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ঘোষণা করে। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ জামায়াত ইসলাম এক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে।

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার জন্য ২৫০০-৩০০০ লোক কেজি স্কুলে সমবেত হন। ওই সময় মামলার বাদী ও তার ভাই সাইফুল ইসলাম মিছিলে অংশ নেওয়ার জন্য ওই স্কুলে যান। তখন উপজেলা জামায়াত নেতাদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি কেজি স্কুলের পূর্ব দিকে অগ্রসর হলে অভিযোগে বর্ণিত আসামি ও অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০জন মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালান।

হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ছিলেন। হামলাকারীদের মধ্যে অনেকে হেলমেট পরে অস্ত্রে সজ্জিত ছিলেন। কাদের মির্জা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজনুর রহমান বাদল ও সিরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন মিককের নির্দেশে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আজম পাশা চৌধুরী রুমেল ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্নাসহ ৫০জন আসামি মিছিলে এলোপাথাড়ি গুলি করতে থাকে।

এরপর লাঠিসোঁটা দিয়ে মিছিলের লোকজনের ওপর আঘাত করতে থাকে। কাদের মির্জার গুলিতে মামলার বাদীর ভাই সাইফুল ইসলামের বুকের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হয় এবং মিকনের ছোঁড়া গুলি পেট ছিদ্র হয়ে বের হয়ে যায়।  

মামলায় আরও বলা হয়, তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুজ্জামানের নির্দেশে পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এসআই শিশির কুমার বিশ্বাস জামায়াত কর্মী মশিউর রহমান সজিবের ওপর গুলি চালান। এসআই ঊক্যসিং মারমা সজিবের বুকের নিচে গুলি করে।        

নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা ইসহাক খন্দকার বলেন, “২০১৩ সালে কোম্পানীগঞ্জে জামায়াতের মোট ৭জন নেতাকর্মী মারা যান। ওই সময় ৩ জনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। ওই ঘটনায় উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ৪ জনের মরদেহ ময়নাতদন্ত হয়নি এবং মামলা হয়নি। বর্তমানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার চান নিহতের স্বজনরা।” 

Link copied!