দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালীন সময় বাগেরহাটের মোংলায় এক নির্বাচনী পথসভায় ‘নারী নেতৃত্ব হারাম’ বলে বক্তব্য দেওয়া সেই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদারের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) রাতে মোংলা থানায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন এ মামলাটি করেন।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করায় ইউপি চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদারের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
ইকরাম ইজারাদার সুন্দরবন ইউনিয়ন পরিষদে ২০২১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মোংলা উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়ন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
মামলার বাদী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বাগেরহাট-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে গণ প্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৭৭ এর বিধান এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ১১ (ক) লঙ্ঘন করেছেন। এই অবস্থায় নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করে। পরে চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদারের বিরুদ্ধে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৭৩ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি ১৮ এর আদেশ এই মামলা করেন তিনি।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গত ৩০ ডিসেম্বর ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইদ্রিস আলী ইজারাদারের এক পথসভার আয়োজন করা হয়। সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান ইকরাম ইজারাদার বলেন, “আমরা গজবের ভেতর নিমজ্জিত আছি। এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। জনমনে কোনো স্বস্তি নেই, শান্তি নেই। তার কারণ, নারী নেতৃত্ব হারাম। নারী নেতৃত্বের অধীনে আমরা এখানে রয়েছি। আমাদের ভোটটা আমরা বেগম হাবিবুন নাহারকে (আওয়ামী লীগের প্রার্থী) দুইবার (ভোট) দিয়ে আমরা নারী নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠিত করেছি। তাই আমাদের এখানে কোনো সুখ-শান্তি অবস্থান করে না। যেটা সত্য, সেই কথা আমি এখানে আপনাদের কাছে বলে গেলাম। উনি একজন নারী, উনি রাজনীতি আর সমাজনীতির বোঝেন কী। কিছুই বোঝেন না।”
তার এই বক্তব্যের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ ঘটনার প্রতিবাদে তাকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে মোংলায় কয়েক দফা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়।