• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে প্রাণ সায়ের খাল


সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৪, ০৬:০০ পিএম
দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে প্রাণ সায়ের খাল
খালের দুই পাড়ে নির্মাণ করা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। ছবি : প্রতিনিধি

সাতক্ষীরা শহরের প্রাণকেন্দ্র প্রাণ সায়েরের খাল এক সময়ে ভরা যৌবন নিয়ে প্রবাহমান ছিল। কিন্তু বর্তমানে খালটি যৌবন হারিয়ে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খালে এখন ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। একই সঙ্গে খালের দুই পাড় দখল করে নির্মাণ করা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। যার কারণে দখল আর দূষণে খালটি এখন অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। পচা দুর্গন্ধ থেকে বাঁচার তাগিদে নাক চেপে রাস্তা পার হচ্ছে মানুষ।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাতক্ষীরা শহরের পাকাপোল, কেষ্টময়রার ব্রিজ, সুলতান পুর বড় বাজার ব্রিজসহ প্রাণ সায়েরের খালের দুই পাড়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিদিন এসব দোকান থেকে খালে ফেলা হচ্ছে ময়লা আর্বজনা। এতে খালের পানি কালো হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, ১৮৫০ সালের দিকে সাতক্ষীরার জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরী নদীপথে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা ও শহরের শ্রীবৃদ্ধির জন্য খালটি খনন করেন। মরিচ্চাপ নদের সঙ্গে বেতনা নদীর সরাসরি যোগাযোগ রক্ষার জন্য সাতক্ষীরা শহরের ওপর দিয়ে ১৪ কিলোমিটার এ খাল খনন করা হয়। খুলনা, বরিশাল, ঢাকা, কলকাতাসহ বিভিন্ন স্থানের সঙ্গে প্রধান যোগাযোগের মাধ্যম ছিল এ খাল। এ খালের মাধ্যমে সহজ হয়ে উঠেছিল জেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগও। জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরীর নাম অনুসারে খালটির নামকরণ করা হয় প্রাণ সায়ের খাল।

স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান হোসেন জানান, এই প্রাণ সায়েরের খালপাড়ের সড়ক দিয়ে কয়েকশ মানুষ হাঁটাহাঁটি করেন এবং গাড়ি করে তাদের গন্তব্যে যান। তাদের নাক চেপে চলাচল করতে হয়। খালের আশপাশের বাসিন্দারা ছাড়াও বড় বাজারে ব্যবসায়ীসহ অন্য ব্যবসায়ীরা ময়লা ও আবর্জনা ফেলে দুর্গন্ধময় পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। এতে সাতক্ষীরা শহরের পরিবেশ অনেক দূষিত হয়ে পড়েছে।

মানবধিকারকর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত বলেন, “প্রাণ সায়ের খালকে যারা ভাগাড়ে পরিণত করছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”

সাতক্ষীরা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র ফিরোজ হাসান বলেন, “মানুষ যাতে খালটিতে ময়লা–আবর্জনা না ফেলেন, সেজন্য বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু কেউ শুনছেন না। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ করেছি খুব দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জানান, প্রাণ সায়ের খালপাড়ের বাসিন্দা ও দোকানদারদের নোটিশ করে নিষেধ করা হবে। তারা না মানলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Link copied!