গোপালগঞ্জ সদরের একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে মো. ফেরদাউস শেখ (৪৫) নামের এক ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে পাথালিয়া পিঠা গার্ডেন হোটেল থেকে লাশটি উদ্ধার করেছে সদর থানা-পুলিশ।
মারা যাওয়া ফেরদাউস শেখ টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া পার ঝনঝনিয়া গ্রামের ইমদাদুল হক শেখের ছেলে। তিনি গরুর খামারি ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের আগামী সম্মেলনে সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন। পরিবারের দাবি, পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ সদর থানা-পুলিশ জানায়, তারা হোটেলের কক্ষ থেকে ফেরদাউস শেখের মরদেহ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হবে। তবে তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফেরদাউস শেখের ছোট ভাই মিজানুর রহমান বলেন, “মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমার ভাই বাসা থেকে বের হয়। একসঙ্গে ভাত খাওয়ার জন্য রাত ৯টার দিকে ভাইয়ের মুঠোফোনে কল দিই। আমাকে বলল, আমি টুঙ্গিপাড়ায় বন্ধুর বাড়িতে আছি, পরে আসব। সকালে তার মুঠোফোনে কল দিলে বন্ধ পাই। পরে দুপুরে গোপালগঞ্জ থানা-পুলিশ আমাদের কল দিয়ে তার লাশ উদ্ধারের কথা জানায়।”
মিজানুর রহমান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “এক মাস আগে আমার ভাইয়ের যমজ দুই মেয়ে হয়েছে। আমরা পরিবারের সবাই আনন্দিত ছিলাম। ভাইয়ের নিষ্পাপ দুটি বাচ্চা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাবাকে হারাল।”
মিজানুর জানান, তার ভাই ফেরদাউস ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি এস এম জিলানীর গাড়িবহরে হামলা ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে ১২ নভেম্বর একটি মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছিল।
মিজানুর তার ভাইয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, বুধবার দুপুরে পিঠা গার্ডেনের ব্যবস্থাপক তুহিন মোল্লা গোপালগঞ্জ সদর থানায় এসে জানান, রাতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলের কক্ষ ভাড়া নেন এক ব্যক্তি (ফেরদাউস শেখ)। সকালে নারীটি কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। দুপুরে ফেরদাউস শেখ নামের ওই ব্যক্তি কক্ষ থেকে বের না হলে তার কক্ষে গিয়ে তারা মরদেহ দেখতে পান।
ওসি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হোটেল ব্যবস্থাপকের কথার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
পিঠা গার্ডেনের মালিক ফারুক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “দুজন স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে হোটেলের কক্ষ ভাড়া নেন। কর্মচারীরা কক্ষ বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে ভেতরে প্রবেশ করে তার মরদেহ দেখতে পান। এ মৃত্যুর ঘটনা কীভাবে হলো, আমাদের জানা নেই।”