• ঢাকা
  • শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩০, ১ শা'বান ১৪৪৬

সীমান্তে বিজিবির সঙ্গে তর্কে জড়ালো বিএসএফ


লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৫, ০৫:৪৮ পিএম
সীমান্তে বিজিবির সঙ্গে তর্কে জড়ালো বিএসএফ

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) উপস্থিতিতে ভারতীয়রা বাংলাদেশের লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম সীমান্তের শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়ায় এবার বাঁশ বেঁধে দিয়েছেন। এসময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) প্রতিবেশী দেশের এ কাজের বিরোধীতা করলেও তারা (ভারতীয়রা) কোনো তোয়াক্কা করেননি।

এঘটনার এক মিনিট ৫১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও উভয় দেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গেছে, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার সঙ্গে বাঁশ বেঁধে দিচ্ছেন ভারতীয় কৃষকরা। পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন বিএসএফের সদস্যরা। বিজিবির সদস্যরা তাদের নিষেধ করলেও তা শোনেননি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে দহগ্রাম ইউনিয়নের হাঁড়িপাড়া ও সরকারপাড়া সীমান্তে বিএসএফের জিরোর লাইনে লাগানো কাঁটাতারের বেড়ায় বাঁশের বাতা (বাকল) দিয়ে শক্ত করার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি বাধা প্রদান করে। কিন্তু বিএসএফ কোনো কথা না শুনে তাদের লোকজন দিয়ে জোরপূর্বক বেড়া দেয়। তবে বিএসএফ সদস্যদের দাবি, কৃষকরাই এ কাজ করছেন।

ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বিজিবি-বিএসএফের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সীমান্তে উভয় দেশ আপাতত কোনো ধরণের নির্মাণ কাজ হবে না- বিজিবির একজন সদস্য বিএসএফকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা উপেক্ষা করে তর্কে জড়ান বিএসএফ সদস্যরা। এ সময় একজন বিএসএফ সদস্যকে উচ্চস্বরে হিন্দিতে বলতে শোনা যায়, “আমরা কাজ করব, তোমার যা করার তুমি করো।”

তবে পরে বিএসএফ সদস্যরা বলেন, “আমরা কাজ করছি না, ভারতীয় পাবলিক ওই বাঁশের বেড়া দিচ্ছে।” এরপর বিজিবি সদস্য বলেন, “তাহলে আপনারা সীমান্তের শুন্য রেখায় তাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?” উত্তরে বিএসএফ সদস্যরা বলেন, “আমরা সীমান্ত পাহারা দিচ্ছি।”

এর আগে গত ১০ জানুয়ারি দহগ্রাম সীমান্তে শূন্যরেখা বরাবর প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশজুড়ে চার ফুট উচ্চতার ওই বেড়া নির্মাণ করেছিলেন ভারতীয়রা। এতে বিজিবি বাধা দিলে উভয় বাহিনীর মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা হয়। বিষয়টি নিয়ে উভয় বাহিনীর ডিআইজি পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠক থেকে আপাতত কাজ না করার সিদ্ধান্তের পর সীমান্ত থেকে উভয় বাহিনী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। এ ঘটনার এক সপ্তাহ না যেতে সেই কাঁটাতারের বেড়ায় অসংখ্য মদের খালি কাঁচের বোতল ঝুলিয়ে দেয় বিএসএফ ও ভারতীয়রা।

এরপর গত মঙ্গলবার সর্বশেষ সেই বেড়ায় জোর করে বাঁশের বাতা লাগানোর ঘটনা ঘটালো ভারতীয় সীমান্তরক্ষীর সহায়তায় কৃষকেরা।

এ বিষয়ে দহগ্রাম আঙ্গরপোতা সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রেজানুর রহমান রেজা বলেন, “ভারতীয়রা একটার পর একটা ঘটনা ঘটাচ্ছে। তারা কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পর মদের বোতল ঝোলায়। এর কয়েক দিন পর আবার সেই কাঁটাতারের বেড়ায় বাঁশের বাতা বেঁধেছে। এগুলো শয়তানি ছাড়া কিছুই না। দহগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় পাবলিককে দিয়ে জোর খাটিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে বিএসএফ। এটা সীমান্ত উত্তপ্ত করার কৌশল।”

রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পাটগ্রাম পানবাড়ি বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার মো. জামিল বলেন, “এ ঘটনা ৩ থেকে ৪ দিন আগের ঘটনা। বিজিবির পক্ষ থেকে বাঁধা দেওয়ার পর কাজ বন্ধ করেছে বিএসএফ।”

এ বিষয়ে ৫১ বিজিবির কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আল দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

Link copied!