• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

‘শেষ পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকতে দিলা না শিপন’ লিখে নববধূর আত্মহত্যা


শেরপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৪, ০৩:৫৫ পিএম
‘শেষ পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকতে দিলা না শিপন’ লিখে নববধূর আত্মহত্যা

ফেসবুকে প্রেম, এরপর অভিভাবকদের অমতে শিপন নামের এক যুবককে বিয়ে করেছিলেন জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া (২০)। বিয়ের আট মাস পর ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হলো সুমাইয়ার মরদেহ।

যৌতুকের চাপে সংসারে বনিবনা না হওয়ায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ৭ পৃষ্ঠার চিরকুট লিখে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়া (২০) নামের এক নববধূ।

শনিবার (১৩ জুলাই) রাত দশটার দিকে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের বিশগিরি পাড়া গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এসময় একটি চিরকুট পাওয়া যায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৮ মাস আগে শেরপুর সদর উপজেলার সাপমারী এলাকার শিপন নামের এক যুবককের সঙ্গে ফেসবুকে প্রেম ভালোবাসার মাধ্যমে বিয়ে হয় নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের আবুবকর সিদ্দিকের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসী সুমাইয়ার।

এদিকে অভিভাবকের অমতে বিয়ে হওয়ায় মেনে নিচ্ছিল না স্বামী শিপনের পরিবার। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী ও পরিবাবের লোকজনদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় প্রায়ই ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত।

এমনকি শিপন বিয়ের পর যৌতুকের ৮ লাখ টাকার জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন সুমাইয়াকে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করত। এসব বিষয় নিয়ে রাগারাগি করে গত রোজার ঈদের সময় সুমাইয়া তার বাবার বাড়িতে চলে এসে সেখানেই থাকছিলেন।

পরে শনিবার রাতের কোনো এক সময় সুমাইয়া মনের ক্ষোভে একটি চিরকুট লিখে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।

চিরকুটে সুমাইয়া লিখেন, “বিয়ের গোসলটাও পেলাম না। শেষ গোসলটাও পাব না। জানাজাও পাব না। আমার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। অনেক ভালোবাসি তোমাকে শিপন। কিন্তু তুমি শেষ পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকতে দিলা না।”

সুমাইয়া আরও লিখেন, “আমি চাইলে দ্বিতীয় বিয়ে করে জীবনটা ভালোভাবে চালাতে পারতাম। কিন্তু আমি চাই না দ্বিতীয় কেউ আমার শরীরটা উপভোগ করুক।”

বাবা মায়ের উদ্দেশে সুমাইয়া লিখেন, “তোমরা মনে কষ্ট নিও না। শিপনকে সুখে রাখার জন্য আমি চলে যাচ্ছি। আমার মুখ তাকে দেখতে দিও না। আমার শরীরটা কাটতে দিও না। আমি তাহলে কষ্ট পাব।”

বিষয়টি নিশ্চিত করে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম ভুঁইয়া বলেন, সুমাইয়ার মরদেহ ও চিরকুট উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Link copied!