বাবাকে গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে কচুক্ষেতে ফেলে রাখেন একমাত্র ছেলে। এ ঘটনা ঘটে বরিশালের বাকেরগঞ্জে। ঘটনার ১০ মাস পরে রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত ছেলে বাদশা হাওলাদারকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তার আসামি তার বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করে বৃহস্পতিবার বরিশালের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
ওসি জানান, হত্যার রহস্য অত্যন্ত জটিল ছিল। পুলিশ তার পেশাদারত্ব ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড দাওকাঠির বাসিন্দা রুস্তুম আলী হাওলাদার (৭৫) ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল নিখোঁজ হন। দুই দিন পর বাড়ির পাশের কচুক্ষেত থেকে তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৮ ডিসেম্বর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, রুস্তুম আলী হাওলাদারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের ভাই আউব আলী বাদী হয়ে ২১ জানুয়ারি হত্যা মামলা করেন।
নিহত রুস্তুম আলী হাওলাদার দীর্ঘদিন বিদেশে শ্রমিকের কাজ করতেন। বৃদ্ধ বয়সে দেশে ফিরে দাওকাঠিতে দোতলা বিল্ডিং তুলে বসবাস শুরু করেন। পরিবারের প্রধান হিসেবে অন্যান্য সদস্যদের নিয়মিত অনুশাসন করতেন। বিষয়টি তার ছেলে মেনে নিতে পারছিলেন না। এজন্য বাবাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে কয়েক দফায় পরিকল্পনা ও চেষ্টা চালান।
সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল বেলা ১১টার সময় দেখতে পায়, তার বাবা বাড়ির পাশের কচুক্ষেতে কাজ করছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ছেলে কচুক্ষেতে গিয়ে পেছন থেকে একটি গামছা দিয়ে বাবার গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। মরদেহ কচুক্ষেতে রেখে পাতা দিয়ে ঢেকে দেয়। বাবাকে হত্যার পর স্বাভাবিক জীবনযাপন করছিল বাদশা। বাবার হত্যা ও পরিকল্পনাসহ সব বিষয়ে গোপন রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করলেও দিনে দিনে বাদশা হাওলাদারের অস্বাভাবিক আচরণ সবার সন্দেহ হয়। সেই সূত্র ধরে ২২ জানুয়ারি তাকে পুলিশ হেফাজতে নিলে হত্যার কথা স্বীকার করেন বাদশা।