• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি: পবিত্রতার আগেই ডুবে মরল দুই বোন


পঞ্চগড় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২, ০৯:৩৭ পিএম
পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি: পবিত্রতার আগেই ডুবে মরল দুই বোন

হিন্দু ধর্মাবলীদের মহালয়া পুজা উপলক্ষে মন্দিরে যাওয়ার পথে নৌকা ডুবে এখন পর্যন্ত ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় করতোয়া নদীর জলে পবিত্র স্নানের আগেই ডুবে মারা গেছে কবিতা রানী (১০) ও পুতুল রানী (১৫) নামের দুই বোন।

নৌকা ডুবির ঘটনায় টানা দুই দিন নদীর পানিতে নিখোঁজ থাকার পর স্থানীয়দের সহায়তায় দুই বোনকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে বিরাজ করতে শোকের ছায়া।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ঘাট করতোয়া নদী থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

পারিবারিকভাবে জানা গেছে, বোদা উপজেলা সাকোয়া ইউনিয়নের গোবিন্দ গুরু তপশিলি উচ্চ বিদ্যালয়ে পুতুল অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। তার ছোট বোন কবিতা পড়তো গুবিন্দ গুরু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে। রোববার মহালয়ার দিন বেলা ১১টায় বাড়িতে মায়ের হাতের রান্না করা সকালের নাস্তা খেয়ে কাকিমা সাথীর সঙ্গে রওয়ানা দেয় পূজোর উদ্দেশ্যে। হোটেল কারিগর বাবা রামবাবু তাদের হাতে হাত খরচের টাকা দেয়। মা এগিয়ে দেয় রাস্তা পর্যন্ত। কাকিমা সাথি রানীর সঙ্গে আত্বীয়স্বজন আরও ৩ জন ছিল।

আউলিয়া ঘাট এসে তারা ভিড়ের মধ্যেই নৌকাটিতে উঠে পড়ে। দুপুড়ে তীরে ভিড়তে না ভিড়তেই নৌকাটি ডুবে যায়। এতে কাকিমাসহ অন্যান্য আত্বীয়রা সাতার কেঁটে ও স্থানীয়দের সহায়তায় ডাঙায় উঠতে পারলেও পুতুল-কবিতা পানিতেই ডুবে যায়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তাদের সলিল সমাধি ঘটে।

গত দুই দিন থেকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না তাদের। বাড়িতে বাবা-মা পাগল প্রায়। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে পুতুলের মরদেহ পাওয়া যায় আউলিয়া ঘাটে। তাৎক্ষনিক পরিচয় না মিললেও দুপুরে পরিবার তাদের পরিচয় নিশ্চিত করে। পরে বামণ পাড়া ইউনিয়ন পরিষদে মরদেহ নিয়ে আসা হলে সকল প্রক্রিয়া শেষে বাড়িতে নেয় পরিবার।  

পরিবারের পক্ষ থেকে পারিবারিক বন্ধু সাবেক মেম্বার পুর্ণজয় বর্মণ কবিতা ও পুতুলের মরদেহ গ্রহণ করেন।

পুর্ণজয় বর্মণ জানান, তাদের বাবা-মা পাগল প্রায়। দুটি সন্তানই তাদের। দুইজনেরই মৃত্যু ঘটল। পরিবারে এখন বাবা-মা একা হয়ে গেল।

এর আগে, রোববার ২৫ জনের মরদেহ বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার দ্বিতীয় দিনে আরও ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলেও তৃতীয় দিন মঙ্গলবার ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জেলায় মৃতের সংখ্যা দাড়াল ৬৮ জনে।

এদের মধ্যে নারী ৩০, পুরুষ ১৭ ও শিশু ২১ জন। 

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!