বিএনপির দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ২৫


নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম
বিএনপির দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ২৫

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের স্থান নির্ধারণকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পাল্টাপাল্টি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার (৩১ আগস্ট) সন্ধ্যার পর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। একপর্যায়ে রাত ৮ থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার বাবু টকিজ হলের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনীসহ যৌথ বাহিনীর টহল দেখে উভয়পক্ষ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন কিশোরগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির সদস্য হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গ্রেনেড বাবু (৪৫), সদরের কামারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও বিএনপি কর্মী লেবু মিয়া (৪২), যুবদলের সদস্য ও ইসমাইল এলাকার  সাদেকুল ইসলামের ছেলে রিশাদ (২২), বিএনপি কর্মী নূরনবী (৪২), লেবু মিয়া (৫৫), হাবিবুল্লাহ (৩৫), জুয়েল (১৮), সৈয়দ আলী (৩২) ও জুয়েল (৪৪)। আহত অন্যরা বিভিন্ন দোকানে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বর্তমান উপজেলা বিএনপির কমিটি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা পাটোয়ারীর মধ্যে কমিটি গঠন নিয়ে বিরোধ চলছিল। দুপক্ষই কেন্দ্র ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন করে আসছেন। ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দোয়া মাহফিল আয়োজনের জন্য বিএনপি নেতা মাসুদ রানা পাটোয়ারীসহ নেতারা কিশোরগঞ্জ হাইস্কুল মাঠে স্থান নির্ধারণ করেন।

অন্যদিকে একই স্থানে মূল বিএনপিও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দোয়া মাহফিলের স্থান নির্ধারণ করে। উভয়পক্ষ একই স্থান নির্ধারণ করাকে কেন্দ্র করে শনিবার সকাল থেকেই কিছুটা উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

এর মধ্যে মাসুদ রানা পাটোয়ারী বর্তমান কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সাধারণ সম্পাদক একে এম তাজুল ইসলাম ডালিমকে ক্ষিপ্ত হয়ে মোবাইল ফোনে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরে সন্ধ্যার দিকে বর্তমান কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বাজারের দিকে আসার সময় মাসুদ রানা পাটোয়ারী গ্রুপের নেতা-কর্মীরা তার ছোটভাই সদর ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গ্রেনেড বাবুর দোকানের সামনে তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন। পরে বর্তমান কমিটির সভাপতির কর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠিসোটা ও ইট পাটকেল হাতে নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেন। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

উভয়পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলে। এতে মাসুদ রানার ছোটভাই জাতীয় পার্টির সদস্য ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গ্রেনেড বাবুসহ বিএনপির ২৫ নেতা-কর্মী আহত হন। পরে বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সদর ইউপি চেয়ারম্যানের দোকান ভাঙচুর করেন। এ সময় শহরের দোকানপাট বন্ধ ছিল। এ সংঘর্ষের পর শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “স্থানীয় পুলিশের পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হওয়ায় পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবগত করি। তারপর সেনাবাহিনীসহ যৌথ বাহিনী এলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। যৌথবাহিনীর টহল দেখে উভয়পক্ষ স্থান ত্যাগ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”
 

Link copied!