ফেনীতে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পালাক্রমে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। হিন্দুদের মন্দিরসহ বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ থেকে রক্ষা করতে তারা হাতে লাঠি ও টর্চলাইট এবং মুখে বাঁশি বাজিয়ে রাতভর পাহারা দিচ্ছেন। এতে হিন্দুদের মধ্যে আতঙ্কের পরিবর্তে স্বস্তি রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণ অভ্যুথানে সোমবার (৫ আগস্ট) দুপুরে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর জেলা শহর বিভিন্ন স্থানে হামলা, ভাংচুর, আগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চলে। এতে জেলার সর্বত্র উদ্বেগ-উৎকন্ঠা ও আতংক ছড়িয়ে পড়ে।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, “দেশের পরিবর্তীত প্রেক্ষাপটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় জেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় সভা করে স্থানীয় নেতাকর্মীদেরকে দিয়ে হিন্দুসহ জনগনের জানমাল ও সম্পদ রক্ষায় কমিটি করে দিয়েছি। যেন কোনো দুষ্কৃতকারী জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে না পারে।”
তিনি আরও বলেন, “একই সঙ্গে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সবার কাছে প্রশাসনের সহায়তার জন্য মুঠোফোন নম্বর দিয়েছি। যাতে করে তারা যেকোনো পরিস্থিতিতে ফোন করে প্রশাসনের সহায়তা নিতে পারে।”
জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মুফতি আবদুল হান্নান বলেন, “আমাদের সকল জনশক্তিকে সংখ্যালুগুদের বাড়িঘর ও ধর্মীয় উপাসনালয় রক্ষায় পাহারায় রয়েছে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের আশ্বস্ত করেছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এসব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।”
জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ সভাপতি শুকদেব নাথ তপন বলেন, “ক’দিন ধরে বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা হিন্দুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদেরকে নিরাপদে থাকতে আশ্বস্ত করছেন। একই সঙ্গে তারা আমাদের মন্দিরগুলো পাহারা দিচ্ছে। এতে করে হিন্দুদের মধ্যে ভীতি দূর করতে কাজ করছে। এ পর্যন্ত জেলার কোথাও হিন্দুদের কোনো বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মন্দিরে কোনো ধরনের হামলা কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”
জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, “পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ফেনীতে বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ইতোমধ্যে বিএনপি ও জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তারা আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী সকলে মিলে আমরা কাজ করছি।”