মাদারীপুরের শিবচরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে হিরু মাতুব্বর (৩৫) নামের একজন নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের অন্তত পাঁচটি বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় দত্তপাড়া ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামে এ হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এর আগে একই দিন দুপুরে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে হিরু মাতুব্বর নিহত হন।
হিরু একই ইউনিয়নের আর্য্যদত্তপাড়া এলাকার এসকেন্দার মাতুব্বরের ছেলে। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দত্তপাড়া ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মালেক মোল্লার সঙ্গে টুকু ফরাজির বিরোধ চলে আসছিল। রোববার রাতেও এই দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরই জেরে উভয় পক্ষের লোকজন সোমবার দুপুর ১২টার দিকে দেশি অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দিয়ে আবার সংঘর্ষে জড়ান। এতে আহত হন উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন। এ সময় মালেক মোল্লার অনুসারী হিরু আর্য্যদত্তপাড়া এলাকায় গেলে তাকে একা পেয়ে কুপিয়ে জখম করেন টুকু ফরাজি ও জিয়াউল মাতুব্বরের লোকজন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় হিরুকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হিরুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পালিয়ে যান প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সুযোগে মালেক মোল্লার লোকজন প্রতিপক্ষ সাঈদ খাঁ, আক্কাস মাতুব্বর, ফাজর মাতুব্বর ও চানু মিয়ার বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন তাদের বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে শিবচর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আবার সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় সেনাবাহিনী ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শিবচর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা রতন কুমার ঘোষ বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করি। কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে স্থানীয় ও আমাদের টিমের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।”
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকতার হোসেন বলেন, নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সন্ধ্যার আগে পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখন একটি পক্ষ ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালায়। পরে দ্রুত পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।