• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বাস টার্মিনাল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় বিএনপির দুপক্ষ


বরিশাল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪, ০৯:০৮ এএম
বাস টার্মিনাল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় বিএনপির দুপক্ষ

বরিশাল নগরের রুপাতলী বাস টার্মিনালের কর্তৃত্ব দখল করাকে কেন্দ্র করে বিএনপি সমর্থিত শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৭ জন মাহিন্দ্রা ও সিএনজিচালিত অটোচালক আহত হন। 

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে রুপাতলী থেকে ঝালকাঠি-মঠবাড়িয়া-ভান্ডারিয়া রুটে চলাচলরত থ্রি হুইলারে চাঁদাবাজি নিয়ে বিবদমান ওই দুই পক্ষ শ্রমিকের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। 

জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের আগে এই রুটে থ্রি হুইলার থেকে চাঁদা উত্তোলন হতো। বর্তমানে বিবদমান দুই পক্ষ শ্রমিক ইউনিয়নের পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠন করে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। 

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে সেনাবাহিনী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে গিয়ে কারা বৈধ শ্রমিক, তা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।

রুপাতলীর থ্রি হুইলারের চালকেরা দাবি করেছেন, ৫ আগস্টের আগে তাদের প্রতি ট্রিপে ১০০ থেকে ২০০ টাকা দিতে হতো। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে বিএনপিঘেঁষা শ্রমিক নেতারা নতুন করে আবার চাঁদা উত্তোলনের পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। 

শুক্রবার আহত হয়ে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি শ্রমিকেরা জানান, তাঁরা আর কাউকে চাঁদা দিতে রাজি নন।

জানতে চাইলে নিজেকে রুপাতলী শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যসচিব দাবি করে নাতি কালাম বলেন, “শুক্রবার রাতে অপেশাদার এবং পেশাদার শ্রমিকদের নেতৃত্ব নিয়ে ঝামেলা হয়। যারা পরিবহন সেক্টরে নেই, শ্রমিক নয়, তারা এখন রুপাতলী বাসস্ট্যান্ডের শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। আগে খেয়েছে সুলতানের পরিবার, এখন খেতে চায় মোল্লার পরিবার। মোল্লা পরিবারের মাসুদ মোল্লা আহ্বায়ক হয়ে রুপাতলী শ্রমিক ইউনিয়নের ভুয়া কমিটি করেছে। মাসুদ বিএনপি নেতা রাজিব মোল্লার ভাই।”

কালাম আরও বলেন, “পেশাদার শ্রমিকেরা ভুয়া কমিটির সঙ্গে থাকতে চায় না। তাই আমি ৫ আগস্টের পর প্রকৃত শ্রমিকদের দ্বারা গঠিত শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যসচিব হয়েছি। শ্রমিক ইউনিয়নের এ কমিটি নিয়েই বিরোধ দেখা দিয়েছে। এটি আড়াল করতে মাহিন্দ্রা-সিএনজিচালকদের সামনে এনেছে।” 

তবে তারা পরিবহন থেকে কোনো চাঁদা তোলেন না বলে জোর দিয়ে বলেছেন তিনি।

এদিকে রুপাতলী শ্রমিক ইউনিয়নের অপর কমিটির নির্বাহী সভাপতি দাবি করে মাসুদ মোল্লা বলেন, “রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আগের কমিটির সভাপতি নাসির উদ্দিনকে মারধর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে বিএনপির সমর্থক নাতি কালাম ভুয়া একটি কমিটি করেছে। পরে নাসির উদ্দিন নিজে সভাপতি এবং তাকে (মাসুদ) নির্বাহী সভাপতি করে ১৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি খুলনা শ্রম অধিদপ্তর থেকে অনুমোদন এনেছেন। এই কমিটির সবাই বিএনপির সমর্থিত।”

মাসুদ আরও বলেন, “নাতি কালাম শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতিকে হুমকি-ধমকি দিয়ে লিখিত নিয়েছে। মূলত নাতি কালাম বহিরাগত। তার শ্রমিক ইউনিয়নের কার্ডই নেই। দুই পক্ষের মারামারির পর তাদের নিয়ে বসার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারকে। বৈধ এবং অবৈধ শ্রমিককে বৈঠকে বসে চিহ্নিত করা হবে।”

এ বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার বলেন, “পরিস্থিতি ঠিক করতে সেনাবাহিনী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমেই আহতদের চিকিৎসা করিয়েছি। পরে যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই লোক বাস এবং টেম্পোর শ্রমিক কার্ডধারী দাবি করে আসছে। এ নিয়ে এখানে বিশৃঙ্খলা রয়েছে।”

জিয়া উদ্দিন সিকদার আরও বলেন, “এখন সবাই বিএনপি হয়ে গেছে। প্রকৃত অর্থে বিএনপির কেউ বিশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত নন।”

Link copied!