বরগুনায় সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ মো. আব্দুর রশিদ মিয়াকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ফারুক মোল্লার ছেলে শাওন মোল্লা তাকে মারধর করেন। এ সময় মোবাইলে ধারণ করা একটি ভিডিও মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে সাবেক ওই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নানা বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে আগে থেকেই বিতর্কিত ছিলেন।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, শাওন মোল্লা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ মো. আব্দুর রশিদ মিয়ার এক হাত ধরে নানা ধরনের প্রশ্ন করছেন। এ সময় কালা রশিদ ওরফে চোরা রইশ্যা ওরফে ডাকাত রইশ্যা বলে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেন বলেও বলতে শোনা যায় তাকে। এ সময় আব্দুর রশিদ তার বিভিন্ন অনিয়মের প্রমাণ চান। পরে কথা বলার একপর্যায়ে প্রথমে তার চোখের চশমা টেনে নিয়ে ভেঙে ফেলাসহ তার গায়ে হাত তোলেন শাওন।
মারধরের শিকার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ মো. আব্দুর রশিদ মিয়া বলেন, “আমি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম। এ সময় শাওন মোল্লাসহ আরও কয়েকজন লোক সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তারা হাসাহাসি করেন। এ সময় শাওন মোল্লা আমাকে ডাক দেন। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বসে আমার কাছে জানতে চান, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে আমি কত টাকা কামাই করেছি, মুক্তিযোদ্ধা পল্লী কীভাবে করেছি। এ সময় তাদের বলি আমি যদি কোনো অনিয়ম করি তাহলে তার প্রমাণ দেখান। এছাড়া এখনতো আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় নেই আর আমিও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নই। তখন আমার কথার কোনো গুরুত্ব না দিয়ে আমাকে বিভিন্ন ধরনের গালাগালিসহ আমাকে মারধর করা হয়।”
আব্দুর রশিদ মিয়া আরও বলেন, ঘটনার পরপরই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা হলেও এখনো আইনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
মারধরের বিষয়ে শাওন মোল্লার কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “বিগত সময়ে আব্দুর রশিদ মিয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার থাকাকালীন আমাদের আনেক সিনিয়র রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বাজে কথা বলেছেন। জেলায় যত বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা আছেন তাদের কাউকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রাখেননি। এছাড়াও তিনি তারেক রহমানকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করায় তার প্রতিবাদ করলে তিনি না থামায় আজকের এ ঘটনা ঘটেছে। আমার দলকে, আমার নেতাকর্মীদেরকে কেউ অসম্মান করে কথা বলবে তা তো আমরা মেনে নিতে পারি না। এছাড়াও ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে তিনি প্রতিহত করতে চেয়েছিলেন। এখন আবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে তিনি দালালি করবেন তা মানা যায় না।”
এ বিষয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, “এখন পর্যন্ত কারও কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”