যশোরের সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজে হামলা চালিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সদস্যরা। হামলায় এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিরোধ করে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, বিগত সরকারের আমলে সাগর ওরফে টোকাই সাগর ওরফে ভাগ্নে সাগর নামে এক সন্ত্রাসী স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতা পরিচয়ে এমএম কলেজ ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিলেন। সেই সাগর সোমবার রাতে লোকজন নিয়ে এমএম কলেজের ছাত্রদলের দুজন নেতা ও একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায়।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা একাট্টা হয়ে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করেন। বিক্ষুব্ধরা সন্ত্রাসীদের আস্তানায় ইটপাটকেল ছোঁড়েন।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, সোমবার এমএম কলেজে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল। এ উপলক্ষে কলেজ প্রাঙ্গণে ছাত্রদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। রাতে সন্ত্রাসী ভাগ্নে সাগরের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ছাত্রদলের দুজন নেতা ও একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায়। এরপর ছাত্ররা একট্টা হয়ে সাগরকে ধাওয়া করে। কিন্তু, কৌশলে পালিয়ে যান সাগর। সাগরের অনুসারীরা এ সময় পাল্টা হামলা চালানোর চেষ্টা করে। শিক্ষার্থীরা তা প্রতিহত করে হকার্স মার্কেটে সাগরের আস্তানায় হামলা চালায়। এ সময় কয়েকটি দোকানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় এবং নানা স্লোগান দেওয়া হয়।
এ পরিস্থিতিতে রাত সাড়ে আটটার পর থেকে এমএম কলেজের উত্তর এলাকায় মানুষের চলাচল কমে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান যশোর জেলা যুবদল সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনছারুল হক রানা, জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাজিদুর রহমান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান। পরে খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে হাজির হয়। সবার প্রচেষ্টায় রাত ১০টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
যশোর জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাজিদুর রহমান বলেন, সোমবার রাত আটটার দিকে সাগরের নেতৃত্বে ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বিল্টু, টিটন, সাধারণ শিক্ষার্থী রানার ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। যার প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজপথে নামে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক আছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী বাবুল জানান, কয়েকজন ছাত্রকে মারপিট করেছে সন্ত্রাসী সাগর। তার প্রতিবাদে ছাত্ররা রাজপথে নেমেছেন এমন সংবাদ শুনে তারা ঘটনাস্থলে হাজির হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ছাত্রদের মধ্যে রোহান নামের একজন বিক্ষোভ করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসী সাগরের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সম্প্রতি তিনি কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে আবার অপকর্মে লিপ্ত হয়েছেন। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।