গরিব ও দুস্থ মানুষের মধ্যে বিতরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের শাড়ি পেয়েছেন হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট ও মাধবপুর) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ সায়েদুল হক ওরফে ব্যারিস্টার সুমনের দুই বন্ধুর স্ত্রী। কিন্তু দুই বন্ধু এই উপহার প্রত্যাখ্যান করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিষয়টি জানিয়েছেন।
সায়েদুল হকের ফেসবুক আইডি থেকে জানা যায়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৪০০টি শাড়ি, ৪৮টি থ্রি-পিসসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক বরাদ্দ দেওয়া হয় হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের এমপি সৈয়দ সায়েদুল হককে। এ বরাদ্দের একটি করে শাড়ি পেয়েছেন চুনারুঘাট উপজেলার গাদি শাইল গ্রামের প্রাণিচিকিৎসক আব্দুল মুকিতের স্ত্রী ও গেরারুক গ্রামের মো. সানু আহমেদের স্ত্রী। আব্দুল ও সানু দুজনই সংসদ সদস্য সায়েদুল হকের বন্ধু হিসেবে পরিচিত।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে গত ২০ বছর আমার আসনের কোনো সংসদ সদস্য তা প্রকাশ করেননি। এবার প্রথম আমি এই তালিকা জনগণের মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে প্রকাশ করি। প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার আমার দুই উপজেলায় বিতরণের জন্য যাদের দায়িত্ব দিই, তাদের একজন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চান। তিনি তার এক বন্ধুর স্ত্রীকে এ শাড়ি বিলি করেন। আবার তারাই একই শাড়ি অন্যজনকে দিয়ে ফেসবুকে এ প্রচারণা করেন। প্রকৃত বিষয় হচ্ছে, একটা পক্ষ আছে, যারা আমার ত্রুটি খুঁজে বেড়ায়। এ পক্ষই এখন এ শাড়ি নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”
প্রাণিচিকিৎসক আব্দুল মুকিত বুধবার (১৭ এপ্রিল) রাতে তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ঈদের আগের রাত ১২টার সময় তাঁর বউয়ের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী রায়হানের মাধ্যমে শাড়িটি পাঠিয়েছেন ব্যারিস্টার সুমন। বাড়িতে নিয়ে খুলে দেখেন এটা জাকাতের শাড়ি। তৎক্ষণাৎ ফেরত পাঠানোর কোনো উপায় না পেয়ে যাঁদের জন্য জাকাত খাওয়া প্রযোজ্য—এমন একজন অসহায় নারীকে দান করে দেন।
একই দিন সানু আহমেদ তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “ব্যারিস্টার সুমনের দেওয়া আমার বউয়ের জন্য জাকাতের সুতি শাড়ির বাজারমূল্য ২৮০ টাকা।...আমার বউ এসব শাড়ি পরে না। আগামীকাল একজন অসহায় মানুষকে শাড়িটি দিয়ে দেব।”
আবদুল মুকিত বলেন, “মনে কষ্ট পেয়ে ফেসবুকে এ স্ট্যাটাস দিয়েছি। তার (ব্যারিস্টার সুমনের) নির্বাচনের সময় আমি এত কষ্ট করেছি। সে কি করে আমার বউয়ের জন্য এ ধরনের শাড়ি পাঠায়। আমার অবস্থান পরিষ্কার, যা সত্য তাই তুলে ধরেছি।”
সানু আহমেদ বলেন, “আমি সুমনের বন্ধু। তার কাছে কিছু পাওয়ার আশায় এ বন্ধুত্ব নয়। সে অন্য মানুষের মাধ্যমে কী করে এ শাড়ি পাঠাল, তা বুঝে উঠতে পারছি না। এ শাড়ি তো আমার পাওয়ার কথা না। এগুলো তো গরিব মানুষের মধ্যে বিতরণের কথা। তাই মনের কষ্ট থেকে ফেসবুকে এ স্ট্যাটাস দিয়েছি।”