• ঢাকা
  • রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

একবেলা খেয়ে অন্য বেলা না খেয়ে থাকছেন বানভাসীরা


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৪, ০৯:৫১ পিএম
একবেলা খেয়ে অন্য বেলা না খেয়ে থাকছেন বানভাসীরা
কুড়িগ্রামে অপরিবর্তিত রয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। ছবি : প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে নদ-নদীগুলোর পানি সামান্য কমলেও ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যার কারণে জেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৯ উপজেলার ৫৫টি ইউনিয়নের প্রায় আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ। দ্বিতীয় ধাপের বন্যা পরিস্থিতিরও কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। এছাড়া চরাঞ্চলগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

বুধবার (১০ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার ৪২১টি চর-দ্বীপচর অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের মানুষ ৭ দিন ধরে বন্যাকবলিত হয়ে রয়েছেন। বাড়িঘরে পানি থাকায় লোকজন নৌকায় বসবাস করছেন। কলা গাছের ভেলায় সম্বল এসব বানভাসীদের। একবেলা খেয়ে আরেক বেলা না খেয়ে থাকছেন বানভাসীরা।

সরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছলেও বেসরকারিভাবে ত্রাণ ত্রতপরতা দেখা যাচ্ছে না এই অঞ্চলে। অনেকেই ত্রাণ সহায়তা পেলেও রান্না করার সরঞ্জাম না থাকায় শুকনো খাবারের ওপর নির্ভর হয়ে আছেন।

এদিকে কাঁচা ঘাস ও খড় না থাকায় গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। টিউবওয়েল ও বাথরুম তলিয়ে যাওয়ায় পয়ঃনিস্কাশনেও বিপাকে রয়েছেন তারা। জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ থেকে ৮৩টি মেডিকেল টিম কাজ করলেও দুর্গম চরাঞ্চলগুলোতে তাদের দেখা যাচ্ছে না।

চর ভগবতীপুরের বাসিন্দা এরশাদ মিয়া বলেন, “গরুগুলা নিয়ে খুব কষ্টে আছি। আমরা এক বেলা খায়া থাকতে পারলেও অবলা পশু তো পারে না। খুব কষ্ট হচ্ছে।”

চায়না বেগম বলেন, “স্বামী নাই। ১টা বাচ্চা নিয়া নৌকার মধ্যে আছি। সকাল থেকে আজ অনাহারে। কেউ কোনো সহযোগিতা করে নাই। খুব কষ্টে আছি।”

জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মঞ্জুর এ মুর্শেদ বলেন, বন্যা দুর্গত এলাকায় ৮৩টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। ২০ হাজার খাবার স্যালাইন, ২০ হাজার পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ৫ হাজার ম্যাট্রো ট্যাবলেট বিতরণের জন্য দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, মঙ্গলবার জেলার নদ-নদীর পানি সামান্য কমলেও ভারতের উজান ও ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে ব্রহ্মপুত্র ও দুধকুমারে পানি বাড়ছে। অন্যদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তা, ধরলাসহ অন্য সব নদ-নদীতে পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে।

জেলা ত্রাণ ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, বন্যার্তদের মাঝে চাল, নগদ টাকা ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।

মোকাবিলায় বুধবার দুপুর পর্যন্ত ৫৪২ মেট্রিক টন চাল, ৩২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ২৩ হাজার ১২০ প্যাকেট শুকনো খাবার ৯ উপজেলায় বিতরণ চলমান।

Link copied!